সেবা প্রকাশনী আর আমি

ভুতুম এর ছবি
লিখেছেন ভুতুম [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ১১/০৮/২০০৯ - ১২:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোটবেলায় মাসে ছয়-সাতটা ছোটদের ম্যাগাজিন আসতো বাসায়। কিশোর তারকালোক, টইটম্বুর, নবারুণ, শিশু, আনন্দমেলা। এর মধ্যে একদিন বাইতুল মোকাররমে জুম্মার নামাজের পর ম্যাগাজিনওয়ালার কাছে চোখে পড়লো কিশোরপত্রিকা। সেবা প্রকাশনীর সাথে সেই প্রথম পরিচয় ।সেবার লোগোটা মনে আছে আপনাদের? একটা চৌকোনা লাল ব্লকের মধ্যে হলুদে লেখা "সেবা", আমি মনে করতাম ওটা মনে হয় "সব" লেখা। ভাবতাম "সব" প্রকাশনী ক্যামন নাম হলো।

কিশোরপত্রিকার নিয়মিত খদ্দের হয়ে গিয়েছিলাম সেই প্রথমবার কেনার পর থেকেই। পত্রিকার মধ্যে মধ্যে সেবা আর প্রজাপতি প্রকাশনীর ক্লাসিকগুলোর বিজ্ঞাপন থাকতো, উফফ কী যে লোভনীয় লাগতো বইগুলো। পত্রিকার অন্যান্য লেখার চেয়ে তালিসমান, কুমায়ুনের মানুষখেকো, জেন্ডার বন্দী, রবিনহুড, বেনহুর, মানিকজোড় - এসব বইয়ের বিজ্ঞাপনগুলোই যেন বেশি টানতো। একবার কিশোরপত্রিকায় ধাঁধাঁর জবাব দিয়ে পরপর তিন সংখ্যা ফ্রি জিতেছিলাম - কি যে খুশি ছিলো আমার।

সেবাসেবা

এরমধ্যে একদিন মেজোমামা এলেন চট্রগ্রাম থেকে ট্রেনে চড়ে। আব্বুর হাত ধরে আমিও গেলাম কমলাপুর রেলস্টেশনে, সেই প্রথমবার। প্লাটফর্মে ঢোকার মুখে দেখি দুটো পাশাপাশি সংবাদপত্র বিক্রয় কেন্দ্র। আব্বুর হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলাম সেইখানে, দেখি "রেসের ঘোড়া" নামে ঘোড়ার ছবিওয়ালা একটা বই ঝুলছে, লেখকের নাম রকিব হাসান। মনে পড়লো এই নামটা তো দেখেছি কিশোরপত্রিকায়, কিনেই ফেললাম বইটা। দোকানটার নাম ছিলো "ক্যামলট বুক স্টল", বইয়ের মধ্যে সিল মারা থাকতো। এই দোকানটা থেকেই পরবর্তীতে নিয়মিত বই কেনা হতো, এখনো মাঝে মাঝে যাওয়া হলেই কোন না কোন বই কিনে নিয়ে আসি।

বাসায় এসে তন্ময় হয়ে শুরু করলাম বইটা পড়া। শুরুটাই যে কিরকম - হ্যালো, আমি কিশোর পাশা বলছি। লস অ্যান্জেলসের রকি বিচ থেকে ... একটা অদ্ভুত আকর্ষণের হাতছানি। তিন গোয়েন্দার কোন বই আর কিনতে বাদ দিইনি তখন থেকে ক্লাস টেন পর্যন্ত। মাসের নতুন বইটা কিনে দিতো আব্বু, আর টিফিনের পয়সা জমিয়ে আমি কিনতাম পুরনো ভলিউমগুলো। ইদানীংকার ভলিউমগুলোর প্রচ্ছদ সব ভিন্ন ভিন্ন, তখন সবগুলোর একই রকম ছিলো, সাদার মধ্যে টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ। আপনারা কী ভাবেন জানি না, আমার কাছে কিন্তু আগের সেই প্রচ্ছদই ভালো লাগতো। তিন গোয়েন্দার বইগুলোর মধ্যে ভালো লাগতো অ্যাডভেঞ্চারগুলোই বেশি - ভীষণ অরণ্য, দক্ষিণের দ্বীপ, পোচার - এইসব। তবে কাকাতুয়া রহস্যের কথা না বললেই নয়, এতো ভালো গোয়েন্দা কাহিনী খুব কমই পড়েছি।

তিন গোয়েন্দার বই পড়তে পড়তেই পরিচয় হলো রেজা-সুজার সাথে। পরবর্তীতে শুনেছিলাম রেজা-সুজার লেখক আবু সাইদ আর তিন গোয়েন্দার লেখক রকিব হাসান একই ব্যক্তি। এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়ে পেয়ে গেলাম জুলভার্ন ভলিউম এক আর দুই। উরেব্বাস সে কী মজা পেয়ে গেলাম সায়েন্স ফিকশন পড়তে। আশিদিনে বিশ্বভ্রমণটা আগে অন্য কোন প্রকাশনীর অনুবাদ পড়া ছিলো, কিন্তু সেবার অনুবাদে পুরো মজাটা পেলাম। এটা সেবার যেকোন অনুবাদেই লক্ষ করেছি, ভাষার ঝরঝরতা একটুও হ্রাস পায় না , বরং কোন কোন ক্ষেত্রে বেড়ে যায়। যেমন, "ত্রিরত্নের নৌবিহার" - জেরোম কে জেরোমের দমফাটানো হাসির উপন্যাস "থ্রি মেন ইন আ বোট" এর বঙ্গানুবাদ। আসল বইটা পড়ে সেইরকম মজা পেয়েছি, কিন্তু তার চেয়ে বেশি মজা পেয়েছি শামসুদ্দীন নওয়াবের অনুবাদ পড়ে। অনেকটা আনন্দের টিনটিন অনুবাদের মতো, ইংরেজিতে পড়ে যা মজা, বাংলায় পড়ে তার চেয়ে বেশি।

যাই হোক, লাইনচ্যুত হয়ে গেছি। ফেরত আসা যাক আগের কথায়। ক্লাস ফাইভে ওঠার পর বইমেলা থেকে প্রজাপতি প্রকাশনের স্টল থেকে কিনলাম রবিনহুড, মানিকজোড়, সিংহ আর ডাইনী, এবং হীরক রাজার দেশে। শেষের দুটো বিখ্যাত ক্রনিকলস অভ নারনিয়ার প্রথম দুই খন্ডের অনুবাদ। মানিকজোড় ওডহাউসের "মাইক এন্ড স্মিথ" এর, আর রবিনহুড কিসের জানি না। এর মধ্যে রবিনহুড আর মানিকজোড়ের সাথে আমার খুব বেশি সম্পর্ক, আমার ছোটবেলার কত কল্পনা জড়িয়ে ছিলো এই দুটো বইকে। রবিনহুড পড়তে পড়তে আসলেই হারিয়ে যেতাম শেরউড জঙ্গলে, অকুতোভয় এই দস্যুর কাহিনী পড়তে পড়তে মনে হতো আমি নিজেও যেন তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রথম বার যখন বইটি পড়ি, শেষে রবিন যখন মারা যায় লিটল জনের কোলে মাথা রেখে, সেই প্রথম আমার বই পড়ে কান্না। এর আগে কেঁদেছি মার খেয়ে, খেলতে যাবার জন্য, কেঁদেছি নতুন জামা আর খেলনার লোভে, কিন্তু সেই প্রথম এত ব্যক্তিগত আর গোপন কোন শোকে কেঁদেছিলাম। আজো এমন আছি, গান শুনতে শুনতে বই পড়তে পড়তে সিনেমা দেখতে দেখতে চোখে কতশতবার পানি এসেছে, কিন্তু এখনো মনে আছে সেই প্রথমবারের কথা। এমনকি এখনো যখন রবিনহুড পড়ি, চোখে পানি আসবেই, কিছুটা রবিনকে হারানোর শোকে, কিছুটা সেই ক্লাস ফাইভের ছটফটে বাচ্চাটাকে হারানোর শোকে।

আর ছিলো মানিকজোড়। পড়তে পড়তে স্বপ্ন দেখতাম আমিও ক্রিকেট খেলছি শামিমের মতো, দুর্দান্ত সব ছয় হাঁকিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছি। কখনো ভাবতাম, নাহ্ , আমি বাক্কু হবো, পেস বোলিংয়ের তুবড়িতে উড়িয়ে দেবো সবগুলো স্ট্যাম্প। দুঃখ হতো আমার স্কুল কেন ইদিলপুরের সেই স্কুলটা না। মানিকজোড় আর রবিনহুড - এই দুটো বই আমি বারবার হারিয়েছি, যতবার হারিয়েছি কিনেছি আবার।

মাসুদ রানার নিষিদ্ধ জগতে প্রবেশ ক্লাস সেভেনে, এক বন্ধুর হাত ধরে। প্রথম বই ছিলো "রক্তের রং" - উ সেনকে নিয়ে প্রথম বই। পড়তে পড়তে যখন সেই নিষিদ্ধ অংশগুলো আসতো, ক্যামন জানি মুখ-চোখ লাল হয়ে যেতো। তড়িঘড়ি করে কোনমতে সে অংশটুকু শেষ করে পরের দিকে দৌড়। আরেকটু বড় হয়ে আর এমনটা ছিলো না যদিও, তখন অপেক্ষা থাকতো ঐ অংশগুলোরই। চোখ টিপি তবে যত যাই হোক, রানা কিন্তু ফিকশনের বাংলাদেশি একমাত্র সুপারহিরো। আর রানার কিছু কিছু বই এত ক্লাসিক পর্যায়ের জিনিষ, যে সেটাকে চিপ থ্রিলার বলে চালানোর কোন উপায় নাই। অগ্নিপুরুষের কথাই ধরুন। এর আসল বইটা আমি পড়েছি, দেখেছি ডেনজেল ওয়াশিংটনের করা মুভি, দেখেছি অমিতাভ বচ্চনের মুভি, পড়েছি ছায়া অবলম্বন করে হুমায়ুন আহমেদের রচনা - কিন্তু অগ্নিপুরুষে যে গায়ে কাঁটা দেয়া শিহরণ, যে অদ্ভুত বিষাদে মাখা রানার চরিত্র, যে প্রতিশোধের আগুন - সেই অনুভূতির হাজার ভাগের এক ভাগও আর কোথাও পাইনি, সম্ভব না পাওয়া। এখানটাতেই কাজী আনোয়ার হোসেনের বা সেবার মুন্সিয়ানা। যারা বলেন সেবার বই তো সব বিদেশী কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে লেখা, তাই এগুলোর সাহিত্যগুণ কম, তাদেরকে সবসময় এই একটা বই পড়তে দেই আমি, পড়ে বলেন আসলটা ভালো, না এই "নকল"টা?

রানার বই পড়েছি গোগ্রাসে। একটা বয়সে বাঙ্গালী কিশোর মাত্রই রানা পড়তে বাধ্য। টানে সবাইকে সে, কিন্তু বাঁধনে জড়ায় না। রানার কত বই যে ভালো লেগেছে গোণা শেষ করা যাবে না। অগ্নিপুরুষ আর আই লাভ ইউ ম্যানের কথা বলার কোন দরকার নেই। মুক্ত বিহঙ্গে মাইকেল সেভার্সের চরিত্রটা কি কোনদিন ভোলা যায় ?(ভালো কথা, এই বইটা কোন বইয়ের ছায়ায় লেখা জানেন কেউ?) রানার অ্যাডভেঞ্চার কোথায় হয়নি? লেনিনগ্রাদে পানির নিচে সাবমেরিনে, উদ্ধারে আর্কটিক সার্কেলে, বিদায় রানায় সাগরে, শ্বাপদ সংকুলে আফ্রিকায় - তাবৎ দুনিয়ার এমন কোন জায়গা নেই যেখানে রানা হাঁকিয়ে বেড়ায় নাই। আর তার নারী ভাগ্যও কি আর বলব ;)রানার ধারে কাছে আসতে বন্ডকে আরো শুণ্যশুণ্যসাত বার জন্মাতে হবে। পড়তাম আর মনে মনে কল্পনা করতাম সোহানা দেখতে কেমন, রেবেকা কি আসলেই রানার ভালোবাসা পাবার মত কিছু করছে, রূপা কেন এত পঁচা, ব্যারনেস লিনা অটারম্যান আরো বইয়ে আসে না ক্যান - এইসব আর কি! চান্স পাইলে হান্ড্রেড পার্সেন্ট সোহানারে আমি লয়া যাইতাম। সেই চান্স আর হৈলোকৈ।

রানার ভলিউমগুলোর প্রচ্ছদও তখন ছিলো একই। এমন অদ্ভুত সুন্দর ছিলো সেই প্রচ্ছদটা। নানান টুকরো ছবির একটা কোলাজ, আর সব কোলাজ মিলিয়ে মনে হতো এই তো রানা। একদম উপরের দিকে একটা টুকরো ছবিতে ছিলো কোন তরুণীর ঠোঁটটা শুধু। কতদিন যে শুধু সেই ঠোঁটের দিওয়ানা হয়েই ছিলাম...

রানার বই পড়তে পড়তেই পরিচয় সেবার ওয়েস্টার্নের সাথে। সে আরেক অন্য জিনিষ! রওশন জামিলের নীলগিরি আর জলদস্যু ( ওসমানদের নিয়ে প্রথম দুই বই) বাংলা ভাষায় আমার পড়া খুব ভালো ভাষাশৈলীর নিদর্শন। ওসমান পরিবারের খুব বড় ফ্যান ছিলাম আমি। পরে খুঁজে বের করেছিলাম, ওগুলো আসলে লুই ল'মোর লেখা স্যাকেট সিরিজের বঙ্গানুবাদ। সেগুলোও ভালো, তবু আমার বাংলাটাই বেশি ভালো লাগলো। ওসমানের সাথে ছিলো এরফান। এককথায় দুর্ধর্ষ! এমনি ভালো লেগে গিয়েছিলো যে কিছুদিন রানার বদলে এরফান হবারই স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলাম। কাজী মায়মুর হোসেন লিখতেন সম্ভবত। ইদানীংকার দু'একটা ওয়েস্টার্ন পড়তে গিয়ে ভালো লাগেনি তেমন একটা।

তখন বই কিনতাম নানাখান থেকে । ক্যামলট আর বাইতুল মোকাররমের সামনে পত্রিকাওয়ালার থেকেই বেশি। একদিন হঠাৎই রাস্তার উল্টোদিকে আজাদ প্রোডাক্টসের সামনে গিয়ে চোখে পড়লো পুরনো কিছু বইয়ের দোকান। তখনও নীলক্ষেত চিনি না, কাজেই ঐ অল্প কয়েকটা দোকানকেই মনে হলো বিশাল ভান্ডার! ওখানথেকেই প্রথম রহস্যপত্রিকা কিনি বেশ কয়েকটা। আর তার সাথে দেখলাম রানা আর তিন গোয়েন্দার অনেক পুরনো পুরনো বই। দামটাও নতুন বইয়ের অর্ধেক। রাতারাতি ফ্যান হয়ে গেলাম। এরকম একদিন কিনতে গিয়ে কি মনে করে জানি শী আর রিটার্ন অব শী কিনে ফেললাম। এর আগে সেবার ক্ল্যাসিক যা পড়েছি সবই ছোটদের। শী পড়ে তো মাথা ঘুরে গেলো পুরা - এ কী? এই জিনিষ এতদিন না পড়ে ছিলাম ক্যামনে? এরপর টানা কয়েকমাস শুধু ক্ল্যাসিকই কিনেছি রুদ্ধশ্বাসে। সবচয়ে ভালো লেগেছিলো এরিক মারিয়া রেমার্কের বইগুলোর অনুবাদ। থ্রি কমরেডস ছিলো একটা অসাধারণ বই। জাহিদ হোসেনের অনুবাদ ছিলো "স্বপ্ন মৃত্যু ভালোবাসা", নামটা দেখেই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কিশোর পত্রিকার পিছনে "এ মাসের বই" এর লিস্টিতে নামটা দেখেছিলাম, আর তার সাথে খুদে বর্ণনা। বের হবার সাথে সাথেই কিনে ফেলেছিলাম। কী ঝরঝরে গতিশীল ছিলো বইগুলো!

এর মাঝে কুয়াশার সাথে পরিচয় হয়ে গেলো একবার হঠাৎই।। তখন মাত্র রানায় প্রবেশ করেছি। এরমধ্যে একদিন নানুবাড়িতে গিয়ে মেঝো মামার ট্রাঙ্কের মধ্যে পেয়ে গেলাম প্রায় সবগুলো কুয়াশা আর বেশ কিছু বনহুর। বনহুরের কথা আজ থাক, কুয়াশার কথাই বলি। প্রথম চার-পাঁচটা বই নানুবাড়িতে বসেই পড়ে ফেললাম এক নিঃশ্বাসে, কুয়াশাকে কি যে ভালো লেগে গেলো প্রথম পড়াতেই। সরোজ বাজায় কি গভীর দুঃখ নিয়ে ... ভালো লেগে গেলো সহজ-সরল কামালকে, ভালো লেগে গেলো শহীদের বুদ্ধি আর সাহসকে। কিন্তু বেদনার বিষয়, ঢাকা আসার সময় আনতে পারলাম না বইগুলো, আম্মু কিছুতেই রাজী হলো না এতগুলো বই আনতে। ঢাকায় এসে বড় বিরহ যন্ত্রনায় দিন কাটছিলো, এরই মধ্যে এক বন্ধু দিলো আশ্চর্য এক খবর। ওর ভাইয়ের সংগ্রহে নাকি সব কুয়াশাই আছে। সেদিনই স্কুল ছুটির পর রওনা দিলাম ওর বাসায়, গিয়ে পেয়ে গেলাম কুয়াশার সন্ধান। আর তার সাথে উপরি পাওনা "ছোটমামা আর নীল" - প্রজাপতি থেকে বের হওয়া সাইন্স ফিকশন সিরিজ। সে বইগুলোও লেগেছিলো চমৎকার।

কুয়াশা লিখেছিলেন বিদ্যুৎ মিত্র , কাজী আনোয়ার হোসেনের ছদ্মনাম। জুলভার্ন অনুবাদক শামসুদ্দীন নওয়াব, ক্ল্যাসিক অনুবাদক এ টি এম শামসুদ্দীন - এ দুইজনও নাকি আসলে কাজী আনোয়ার হোসেনই। সত্য-মিথ্যা জানি না অবশ্য।

ক্লাসিক সিরিজে আরো সুন্দর সুন্দর কিছু বই পড়েছি - এখন মনে পড়ছে সারভান্তেসের ডন কুইক্সোটের কথা, শেখ আবদুল হাকিমের গডফাদারের কথা।

আর ছিলো অদ্ভুত কিছু বই, যা সহজে বোঝানো সম্ভব না। যেমন আব্দুল হাই মিনারের লেখা "জামশেদ মুস্তফীর হাড়"। কয়েকটা আধিভৌতিক গল্পের সংগ্রহ। আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারে, এতটা মৌলিক ভাষায় লেখা বই বাংলা সাহিত্যে খুব কম আছে। দুঃখের বিষয়, বইটা আমি হারিয়ে ফেলেছি। গত বইমেলায় খুঁজলাম, বললো আউট অফ প্রিন্ট। কেউ কি জানেন কোথায় পেতে পারি বইটা? ভালো লেগেছিলো কাজী আনোয়ার হোসেনের পঞ্চ রোমাঞ্চ, রকিব হাসানের ছোটবেলার গল্প, লরা ইঙ্গলস ওয়াইল্ডারের লেখা বইগুলোর অনুবাদ (যতদূর মনে পড়ে কাজীদারই করা), ভালো লেগেছিলো কিশোর রামায়ন, কাঠগড়ার মানুষ, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, দশকুমার চরিত ... কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলব।

সব ভালো লাগা বইগুলো এখন হয়তো আর ভালো নাও লাগতে পারে; পুরনো কোন বই হঠাৎ ঘাঁটতে গিয়ে মাঝে মাঝে হতাশ হই, মনে মনে যে ভালো লাগাটা ধরে রেখেছিলাম ততটুকু লাগে না। তবু হুটহাট নিউমার্কেট গিয়ে কিনে ফেলি পুরনো কিছু রানা কি ওয়েস্টার্ন। মনে হয় অতীতের পাতাগুলোয় স্মৃতি একটা সোনালী রং চড়িয়ে দেয় - পুরনো ভালোলাগাটার কাছেই বারবার ফিরে পেতে যায় মন।


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

দারুণ লেখা চলুক

ভুতুম এর ছবি

ধন্যবাদ শিমুল ভাই।
-------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কি যে ভয়ংকর পড়ার নেশা ধরিয়েছিলো সেবা'র ক্লাসিকগুলো।
এখনো কি সেবা প্রকাশনী ঐ সব ক্লাসিক প্রকাশ করে?

সেবার মতো করে অন্য কোন প্রকাশক যদি উদ্যোগ নিতেন বিশ্ব সাহিত্যের সব ক্লাসিক উপন্যাস গুলো সুলভে বাংলাভাষী পাঠকের হাতে পৌঁছে দিতে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

রেজুয়ান মারুফ এর ছবি

এক সময় নাওয়া খাওয়া ভুলে সেবার বই পড়তাম। স্কুলে থাকতে মাসুদ রানা হতে চাইতাম মনে মনে। আপনার লেখাটা পড়তে পড়তে সেই সব দিন সামনে এসে দাঁড়ালো আবার। ভালো লেগেছে।

----------------------------------------------------
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কাব্য নিয়ে ঘুরি।

আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কব্য নিয়ে ঘুরি।

ভুতুম এর ছবি

ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।
------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

অসাধারণ একটা লেখা চলুক

অগ্নিপুরুষের ব্যপারে শতভাগ একমত ... বইটায় মূল চরিত্রের সাইকোলজি, লুবনার সাথে তার বন্ধুত্ব আর অপারেশনের ডিটেইল বর্ণনা, প্রস্তুতি থেকে শুরু করে অশ্ত্রশস্ত্র যোগাড়, একশন, ইন্টারোগেশন, টর্চার সবকিছুই, তার কোনটাই মুভি কিংবা অন্য বইগুলিতে পাওয়া সম্ভব না ... নিঃসন্দেহে রানার সেরা কাজগুলোর একটা ...

এরকম আরেকটা বই হচ্ছে "সেই উ সেন" ... দ্য ডে অভ দ্য জ্যকলের বাংলা ভার্সন ...

জুল্ভার্নের একটা কলকাতা অনুবাদ আছে, নীল মলাটের, কার করা ভুলে গেছি ... দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার জুলভার্ন শুরু সে বইটা থেকে, তিনটার বেশি উপন্যাস পড়তে পারিনি সেখান থেকে ... এর পরে হাতে আসলো সেবার আশিদিনে বিশ্বভ্রমণ, নাইজারের বাঁকে আর মরুশহর ... সেইদিন থেকে জুলভার্নের ফ্যান হয়ে গেলাম ...

সেবা রোমান্টিক ছাড়া আর কোন কিছু পেলেই ছাড়তাম না ... কুয়াশাও অবশ্য কেন জানি খুব বেশি পড়া হয় নাই ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

ভুতুম এর ছবি

রোমান্টিক আমিও অবশ্য পড়তাম না তেমন একটা, তবে দু'একটা পড়েছি, খুব বেশি ভালো লাগেনি। তবে কুয়াশা পড়েন, ভালো লাগবেই।

-------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

এনকিদু এর ছবি

তড়িঘড়ি করে কোনমতে সে অংশটুকু শেষ করে পরের দিকে দৌড়।

ধুর মিয়া, এইটা কী কথা শোনাইলেন । রানার "একই অঙ্গে অনেক রূপ" আমার কোন কালেই ভাল লাগত না, আমি তো রানা পড়তামই ঐ পাতা গুলোর জন্য । আর সব পাতা টান মেরে পার করে দিতাম সেই দুই তিন পাতার খোঁজে ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ভুতুম এর ছবি

আরে যখন ঐ অংশ পার হয়ে যেতাম তখন তো আমি চডু ছিলাম, একটু বড়ু হওয়ার পর তো চোখ টিপি

-------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

রাগিব এর ছবি

ক্লাস ওয়ানে থাকতে জুল ভার্নের বই "নোঙর ছেড়া" দিয়ে আমার সেবা-পড়া শুরু। আমার শৈশব ও কৈশোর পুরোটা জুড়েই ছিলো সেবার বই পড়া।

মানের দিক থেকে সেবার অনুবাদের ধারে কাছেও কেউ আসতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন লেখকের এবং বাংলাদেশেরও অনেকের অনুবাদ করা অনেক বই পড়ে দেখেছি, প্রচন্ড কাষ্ঠল অনুবাদ। সেই তুলনায় সেবার অনুবাদগুলো ঝর্ণাধারার মতোই সাবলীল।

সত্তর ও আশির দশকে লাখ লাখ পাঠক তৈরী করার এই কৃতিত্বটা সেবা প্রকাশনীর প্রাপ্য। সস্তায় পেপারব্যাক বই ছাপিয়ে সেবা প্রকাশনী অনেকেরই চক্ষুশূল হয়েছে, বিশেষত বাংলাদেশের আঁতেল / বিদগ্ধ কবি-সাহিত্যিক-সমালোচক সমাজ সুযোগ পেলেই সেবাকে তুলাধুনা করে ছেড়েছে। কিন্তু বিশ্ব সাহিত্যের সাথে আমার ও আমার প্রজন্মের সবার পরিচয় করে দিয়েছে সেবার ঐ বইগুলোই।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

জিজ্ঞাসু এর ছবি

রাগিবের সাথে একমত।

আমার বিস্ময় লাগত সেবা প্রকাশনী এত এত বই আর ম্যাগাজিন ছাপাতো কী করে!! এত সাবলীল অনুবাদ তথা আধুনিক বাঙলা ভাষার একটা নতুন ধারা বলব - সেবার একক বৈশিষ্ট্য। সেবা আর পশ্চিমবঙ্গের এ ধরনের অনুবাদের বইগুলোর পার্থক্য হল সেবা স্বীকার করে এগুলো অনুবাদ কিন্তু কোলকাতার অনেক প্রকাশক স্বীকার করেন না যে ওগুলো অনুবাদ।

কাজী আনোয়ার হোসেন শুরুর দিকে এত আর্থিক (বলতে গেলে আর্থিক টানাটানির মধ্য দিয়ে) যোগ না থাকা সত্ত্বেও সেবা প্রকাশনীকে আজ পর্যন্ত চালু রাখতে পেরেছেন এটা তার ঐকান্তিক নিষ্ঠার অভূতপূর্ব নিদর্শন।

একটা পাঠকসমাজ গড়ে তোলার পেছনে সেবার অবদান অনবদ্য। কারণ সবসময় ভারি বিষয়বস্তু পড়া দিয়ে পাঠাভ্যাস গড়ে ওঠে না। পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সেবার বইগুলো অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে আধুনিক বাঙলা ভাষায়।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

শাহান এর ছবি

আমি সাধারণত পড়ে চলে যাই, কিন্তু এই লেখায় কমেন্ট না করলে খানিকটা অন্যায় হবে বলে মনে হচ্ছে ...

অসাধারণ লেখা, একটা নির্দিষ্ট বয়সীদের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। সেবাকে নিয়ে লেখার ইচ্ছা অনেকদিন থেকে, কিন্তু মনের ভিতরে সেবার ব্যাপকতা এত বেশি যে কিছুতেই গুছিয়ে আনতে পারি না। তিন গোয়েন্দা, অনুবাদ, ক্লাসিকস, জুলভার্ণ ... আলাদা করে বলতেই হবে রেমার্কের কথা ... বলে তো শেষ করা যাবে না। সেবার কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। কাজীদাকে সালাম।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সেবাকে নিয়ে লেখার ইচ্ছা অনেকদিন থেকে
সত্যিই, শাহান? দেঁতো হাসি

হিমু এর ছবি

মুখফোড় বাটপারটার একটা পোস্ট আছে মাসুদ রানাকে নিয়ে।

পোস্ট পড়ে টের পেলাম, আসলেই বুড়ো হয়ে গেছি মন খারাপ । এই ভুতুমটুতুম সব সেদিনের ছোকরা। আমাদের আমলে ...। যাই হোক।

সেবা প্রকাশনী এক দারুণ, দারুণ উপহার ছিলো জীবনে। আমি খুব ছোটোবেলায় পড়তে শিখেছি, স্কুলে সরাসরি ভর্তি হয়েছিলাম ক্লাস টুতে, সেই স্কুলে যাবার আগেই পড়া শুরু করেছিলাম কুয়াশা। সেই ছিলো শুরু। শহীদ, কামাল, মহুয়া, লীনা, মিঃ সিম্পসন, কুয়াশা, ডি কস্তা ... কী দারুণ সব কাহিনী! অনেক কিছু বুঝতাম না, একে ওকে জিজ্ঞেস করা বিপদে পড়তাম, কিন্তু তারপরও কী যে ভালো লাগা কাজ করতো!

তিন গোয়েন্দা শুরু করেছিলাম মমি দিয়ে। তখন বাসায় মমি পর্যন্তই ছিলো। পরে বাকিগুলি কিনে বা চেয়েচিন্তে পড়েছি।

মাসুদ রানার সাথেও আমার পরিচয় অল্প বয়সেই। এরপর বেশ লম্বা একটা সময় সে অধিকার করে রেখেছিলো।

কিন্তু সেবা প্রকাশনী যে অসাধারণ সব ক্লাসিকের সাবলীল বাংলা অনুবাদ করে কিশোরদের হাতে তুলে দিয়েছে, এর জন্যে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার নেই। মফস্বলের ছোটো বাড়িতে নিরুত্তাপ দিনগুলিতে বাইরের পৃথিবীকে বালক ও কিশোর আমার সামনে খুলে দিয়েছে সেবা প্রকাশনী। সেবার হাত ধরে পড়েছি আশ্চর্য সব ছোটগল্পের অনুবাদ, এখনও এর প্রভাব আমার ওপর রয়েছে।

ভাবছি কাজী আনোয়ার হোসেনের একটা সাক্ষাৎকার নেয়া যায় কি না।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রাগিব এর ছবি

ভুতুমের পোস্ট পড়ে আমারও নিজেকে বুড়ো মনে হলো, কারণ ভুতুম যে বইগুলো দিয়ে শুরু করেছে, আমি ততোদিনে সেসব পার হয়ে গেছি হাসি

--
কুয়াশা আমি পড়িনি বেশি। কারণ শেষের দিকের অন্যগ্রহ-টহ টাইপের করে ফেলে একটু হালকা হয়ে গেছিলো। তবে সাইন্স ফিকশন পড়েছি বিস্তর। আসল 2001 - a space odyssey এর চাইতে "সন্ধানী" (আলীমুজ্জামানের অনুবাদ? বা এই টাইপের কেউ) পড়ে অনেক বেশি মজা পেয়েছি।

---
ওয়েস্টার্নের কথা দেখি কেউ বলে না!! এরফান জেসাপ, কিংবা ওসমান পরিবারের গল্পগুলো পড়তাম, পরে অ্যারিজোনা, বা নিউমেক্সিকোতে গিয়ে সেগুলোর কথা মনে হলো ...

বাংলা সাহিত্যে ওয়েস্টার্ন গল্প নিয়ে সম্ভবত আর কেউই আগে বা পরে কিছু লেখার চেষ্টা করেনি।

----

মাসুদ রানার প্রথম দুইটা বই মৌলিক, বাকিগুলো ছায়াবলম্বনে, কিন্তু কী অসাধারণ অ্যাডাপ্টেশন!! যে কয়েকজন লেখকের প্যানেল বইগুলো লিখতো, আর কাজীদা যেভাবে সম্পাদনা করতেন, ভাষার সাবলীলতার তুলনা নেই। ছায়াবলম্বন করা কিন্তু সহজ কাজ না, বিশেষ করে মেজর জেনারেল রাহাত, সোহেল, সোহানা, গিলটি মিঞা -- এদের সবাইকে দিয়ে কাহিনী বানিয়ে নেয়াটা যথেষ্ট কঠিন ছিলো। অন্যান্য স্পাই থ্রিলারের অনেক কিছুই হাস্যকর হয়ে পড়ে, কিন্তু কাহিনী নির্বাচনে কাজীদার সতর্কতার কারণে রানার বইগুলোর অধিকাংশই সেরা সব কাহিনী থেকে নেয়া।

--

তিনগোয়েন্দার প্রথম বই বের হয় আশির দশকের মাঝের দিকে। রকিব হাসানের হাতও ছিলো দুর্দান্ত। আর বই আদান প্রদান করা, পাড়ার দোকান থেকে বই ভাড়া নেয়া, কতো সব স্মৃতি রয়েছে এসব নিয়ে। আমার বয়সী কিশোরেরা কতো গোয়েন্দা দল বানালো সেই সময় !! আমার খালাতো-মামাতো ভাইদের নিয়ে শ্যাওলা পড়া আমার নানাবাড়ীর বিভিন্ন কোণে কতো "সবুজ-ফটক-১" বানিয়েছি ...

সান্তা মনিকাতে যখন প্রথমবার গেলাম, রকি বিচ আর পাশা স্যালভেজ ইয়ার্ড খোঁজার খায়েশ হয়েছিলো। (আসল থ্রি ইনভেস্টিগেটর্স সিরিজও ওখানেই ছিলো। http://3investigators.homestead.com/files/question10.htm )

---

কাজীদা ইন্টারভিউ সহজে দেন বলে মনে হয় না। দেশে থাকা কেউ সাহায্য করতে পারেন। আর যদি সম্ভব হয়, উইকির জন্য উনার একটা ছবি তুলে দেবেন, এটাই আবদার।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ভুতুম এর ছবি

সন্ধানী পড়েছি, বেশ ভালো লেগেছিলো। বিশাল বই ছিলো!

ঠিকই বলেছেন, সেবা ছাড়া আর কেউ ওয়েস্টার্ন নিয়ে কিছুই তো করলো না।

গোয়েন্দা দল একটা আমরাও করেছিলাম, এক দল নিকটবর্তী কন্সট্রাকশন সাইট থেকে ইট চুরি করে লুকিয়ে রাখতো, আরেকদল ওটা খুঁজতাম।
----------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

ভুতুম এর ছবি

মুখফোড়ের লেখাটা পড়া ছিলো আগে, পড়ে নিলাম আবারও। আর আপনাদের আমলের ব্যাপারগুলো ঝাতি ঝানতে চায়, ঝানিয়ে ফেলুন।

আড় কাজীদার সাক্ষাৎকার নিতে পারলে আসলেই খুব ভালো হয়, নিয়ে ফেলুন না। দৈববশে আমার একবার দেখা হয়ে গিয়েছিলো কাজীদার সাথে। সেবার বইয়ের পিছনে একবার কয়েকমাস ধরে বিজ্ঞাপণ চলছিলো যে সেবায় অনেক পুরনো বই জমে আছে, কেউ সেগুনবাগিচা বয়ে এলে ঐ বইগুলো নামমাত্র দামে বাসায় নিয়ে যেতে পারবে। সাহস করে একদুপুরে চলেও গেলাম সেগুনবাগিচার গলির মধ্যে সেবার সামনে। ঢোকার সময়ই কী যে চমৎকার লেগেছিলো, একদম গেটের সামনে একটা ইটের ছোট চৌবাচ্চা, তাতে ঘোলাটে সবুজ পানির মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে দুটো ছোট ছোট কচ্ছপ! সেই গেট পার হয়ে ঢুকলে ওদের প্রেস, ঘটাঘট ছেপে যাচ্ছে নতুন বইগুলো, (একবার ওখানে দাঁড়িয়ে তিন গোয়েন্দার নতুন বইটার দুই পাতা পড়ে নিয়েছিলাম), আর সেই প্রেসের পাশ দিয়ে উঠে গেছে একটা সিঁড়ি। দোতলায় উঠে সেই সিঁড়ি দিয়ে পেলাম ছোট একটা বারান্দা মতো, আর সেই বারান্দা থেকে একটা কাঠের ব্রিজ পার হয়ে যেতে হয় পাশের বিল্ডিংএ। কিশোর আমার কাছে ক্যামন যে সাররিয়েল লেগেছিলো সেই পরিবেশটা! যাই হোক, সেই কাষ্ঠসেতু পার হলে দুটো রুম, ওখানে সব পুরনো বইগুলো ডাঁই করে রাখা। নানান কিছু বই কিনে গেলাম আরেকটু ভিতরের রুমে, ওখানে টিপু কিবরিয়া বইয়ের দাম রাখছিলেন। এমনি সময় ভিতরের রুমের পর্দা ঠেলে বের হয়ে এলেন কাজী আনোয়ার হোসেন, চিনতে পেরেছিলাম কারণ কিছুদিন আগে কোন পত্রিকায় তার ছবি দেখেছিলাম তার পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নেয়া এক সাক্ষাৎকারে। প্রথম দেখে বিমুগ্দ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, কিছু বলা হয়নি তাকে। এখন দেখা হলে নিশ্চয়ই জানাতাম আমার কৃতজ্ঞতা।
সাক্ষাৎকার যদি নিতে পারেন কোনভাবে, জানিয়ে দেবেন আমাদের পুরো প্রজন্মের শ্রদ্ধা।

-------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সিরাত এর ছবি

সাক্ষাৎকার নিতে পারলে আপনারে গুরুর গুরু মানুম!

কিন্তু আপনে তো সৈয়দ মিয়ারই সাক্ষাৎকারটা নিলেন না। কই সেটা?

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

অসাধারন লেখা ভুতো! চলুক

কুয়াশা'র প্রথম কয়টি পর্ব ছাড়া পরেরগুলো ভাল্লাগেনাই। স্কুল পাশের আগেই তিন গোয়েন্দা বাদ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সময় সেবা পুরোটাই বাদ।

এবারের বইমেলাতে বেশ কয়েকটা বই খুজেছিলাম। কিন্তু কোনোটাই পেলাম না। সেবা'র বইয়ের সেই পেপারব্যাক ভার্সনের চেয়ে হার্ডকভার-ই বেশি দেখলাম।

খুব সম্ভব এ বছরের শুরুর দিকে প্রথম আলো'র শুক্রবারের সাপ্লিতে ছাপা হয়েছিলো কাজীদার সাক্ষাৎকার। দিন-তারিখ মনে নেই।

ভুতুম এর ছবি

ধন্যবাদ সিমন ভাই। আর ঠিকই বলেছেন, আজকাল পুরনো বইগুলো পেপারব্যাক পেতে কষ্ট হয়। হার্ডকভারই ভরসা। মন খারাপ
-----------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সেবা বই-প্রিয় বই অবসরের সঙ্গী।

কাকাতুয়া রহস্য, ঘড়ির গোলমাল, বুদ্ধির ঝিলিক, তিন গোয়েন্দা- এগুলা ছিলো তিগো সিরিজের প্রিয় বই।

রানার ক্ষেত্রে- অগ্নিপুরুষ, আই লাভ ইউ ম্যান, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা, উ-সেনের সবগুলা।

ওয়েস্টার্ন- এরফান জেসাপ।

ক্লাসিক- বলে শেষানো অসম্ভব। বিশেষ করে হেনরী রাইডার হ্যাগার্ডের গুলো...
মন খারাপ সবচে বেশি হয়েছিলো http://www.sachalayatan.com/shu77han/23081রবিন হুড পড়ে। একটা লেখাও দিয়েছিলাম।

---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

ভুতুম এর ছবি

রবিনহুড নিয়ে লেখাটা পড়লাম। অসাধারণ লিখেছেন।

--------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সিরাত এর ছবি

আমি ওয়েস্টার্নের প্রথম পাঁচটা ভলিউমই পড়েছি। অন্যরকম মজা। একরকম চাপা মজা।

এরফান জেসাপের কাহিনী একটু রিহ্যাশ করেন না কেউ।

ভুতুম এর ছবি

আমিও পড়েছি পাঁচটাই। পাঁচটার আমেজ পাঁচ রকম, আর প্রতিটাই অনন্য!

---------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এরফান ইউসুফ থেকে লোকমুখে এরফান জেসাপ। ঘোড়ার নাম ছিলো ব্ল্যাকি। বউয়ের নাম ছিলো রাকা। খাইছে

আলেয়ার পিছে, ডেথসিটি, মৃত্যুর মুখে এরফান- এই তিনটা ছিলো সচে প্রিয়...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

উফ! এক নিঃশ্বাসে না খেয়ে-দেয়ে পড়ে ফেলা সেই মাসুদ রানা পড়ার দিনগুলো... কী বলবো! আর সেবা ক্ল্যাসিকের কেমন ভক্ত তাইলে বলি-ই। গত রোববার গেছিলাম সেন্ট্রাল হাসপাতালে। সেখান থেকে আজিজ মার্কেট। বিভূতি বাবুর আরন্যক অনেকদিন ধরেই কিনবো কিনবো করেও কেনা হয় নি। বিদিতা থেকে সেই বইটা কিনলাম। ফাউ হিসেবে কিনলাম রেহনুমা আহমেদের ইসলামী চিন্তার পূণর্গঠন বইটি। বই কিনে শাহবাগের দিকে হাঁটা। পিজির সামনে হকারের দোকানে সেবা ক্ল্যাসিকের বই ঝুলানো দেখে না কেনার লোভ সামলাতে পারলাম না। সলোমনে গুপ্তধন বইটা পড়া ছিল না। কিনে নিলাম। আর গতরাতেই তা পড়ে শেষ করেছি। হাসি
..................................................................

ঐ যে হাঁটছি মুদ্রা দোষে নাকটা ঘষে
আড্ডা মানেই সেকেণ্ড হাফে খেলছি সোলো
গুজবো না শার্ট আমার পাড়া স্মার্ট পেরিয়ে
সে রোদ্দুরের স্মরণ সভাও লিখতে হল

যুধিষ্ঠির এর ছবি

চমৎকার লেখা। ভালো লাগলো।

আমার সেবা পড়ার শুরু ছিলো "সাগর তলে" দিয়ে - জুল ভার্নের টোয়েণ্টি থাউজ্যাণ্ড লীগস আণ্ডার দ্য সী এর অনুবাদ। এটা প্রথম কবে বের হয়েছিলো খোঁজ নিলেই বুঝতে পারবেন উপরে হিমুরা যে আপনাকে সেদিনকার ছোকরা বলার চেষ্টা করছে - সেই একই জিনিস আমিও তাদেরকে বলতে পারি হাসি

সেবার কাছে আসলে অনেক কৃতজ্ঞতা। জুল ভার্ন দিয়ে সাইন্স ফিকশন আর সেবা পড়ার শুরু। স্যার আর্থার কোন্যান ডয়েল-এর শার্লক হোমস আর প্রফেসর চ্যালেঞ্জার, এইচ জি ওয়েলস থেকে শুরু করে জর্জ লুকাসের স্টার ওয়ারস পর্যন্ত। প্রথম হরর পড়া অশুভ সংকেত দিয়ে। সেবা না থাকলে হয়তো কোনদিন হেনরী রাইডার হ্যাগার্ডের ফ্যাণ্টাসী ফিকশনের সাথে পরিচয়ই হত না। সেইসঙ্গে ক্লাসিকগুলো, জিম করবেট, তিন গোয়েন্দা, ওয়েস্টার্ন। আমাদের প্রজন্ম আমাদের শৈশব আর কৈশোরের জন্য, আর বই পড়ার অভ্যেসটা তৈরী করার জন্য সেবা আর কাজী আনোয়ার হোসেনের কাছে ঋনী।

খুব ছোটবেলায় ঘটনাচক্রে আমার সাথে একবার কাজীদার দেখা হয়েছিলো। আমার মা'র "ছেলে তো স্কুলের বই বাদ দিয়ে সারাদিন আপনাদের বই পড়ে" অভিযোগের উত্তরে উনি বলেছিলেন, "ভাববেন না, এরা তো আমাদের মত না, এরা অন্য জেনারেশন। এইসব বই পড়তে পড়তেই এরা বড় হয়ে একদিন মঙ্গলগ্রহে জমি কিনে আপনার জন্য বাড়ি বানিয়ে দেবে দেখবেন।"

ভুতুম এর ছবি

মঙ্গলগ্রহে বাড়ি বানানো হয়তো হলো না, কিন্তু সেবার বই পড়ে লাভ বই ক্ষতি হয়নি কারোরই, হলফ করে বলতে পারি।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সিরাত এর ছবি

বলেন কি! আপনার কাজীদার সাথে দেখা হয়েছিল। ওউ! হিংসা!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই পোস্ট পড়ার পর যদি মন্তব্য না করি তাহলে অন্যায় হবে।

সেবা প্রকাশনীর প্রতি আমার এবং আমার মত আরো কয়েক কোটি বাংলাদেশীর যে ঋণ তা বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না। উন্নাসিকদের নাক উঁচু হতে হতে আকাশে ঠেকুক, বুলিসর্বস্ব বুদ্ধিজীবিদের জিহ্বা আর কলম/কী-বোর্ড থেকে অপসমালোচনার পুরীষ ঝরে পড়ুক তবু আমি সেবার গুণগান করে যাব। শত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও এর তুলনীয় প্রকাশনী বাংলার জগতে নেই - ছিল না।

ভুতুমের পোস্ট পড়ে হিমু-রাগিবের যদি নিজেকে বুড়ো বলে মনে হয় তবে তাদের পোস্ট-মন্তব্য পড়ে আমার নিজের কী মনে হওয়া উচিত?

আমার সেবা পড়া শুরু সেবার ওয়েস্টার্ন, রোমান্টিক, তিন গোয়েন্দা ইত্যাকার জনপ্রিয় সিরিজগুলোরও জন্মের আগে। সেবার শুরুর দিককার "ভয়াল" সিরিজ পড়া কেউ কি আছেন এখানে? থাকলে একবার আমার সাথে সাক্ষ্য দিন কী চমৎকার একটা সিরিজ শুরু হয়ে আর পথ চলতে পারল না।

কাজী আনোয়ার হোসেন, শেখ আবদুল হাকিম, রকিব হাসান, নিয়াজ মোরশেদ, জাহিদ হাসান এবং এমন আরো কয়েকজনের নাম বলা যায় যাঁদের তুল্য অনুবাদ (বাংলায়) আমি দেখিনি। বিখ্যাত অনেক লেখক আছেন যাঁরা জীবনে একটা-দুইটা অনুবাদ করেছেন যেগুলোকে ভাল বলা যায়। আর সেবার এই লেখকগণ দিনের পর দিন অসাধারণ অনুবাদ কর্ম করে গেছে।

ওয়ার্ল্ড ক্ল্যাসিককে এই বাংলাদেশে শিশু-কিশোরদের নাগালে এনে দিয়েছে সেবা। আজ পর্যন্ত অন্য কেউ তার একশ' মাইলের মধ্যেও পৌঁছুতে পারেনি। সেবার পাঠক একজন কিশোর যতগুলো ওয়ার্ল্ড ক্ল্যাসিকের স্বাদ পেয়েছে অনেক স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবি ততগুলোর নামও বলতে পারবেননা। একটা জাতি, একটা ভাষার জন্য সেবার এই অবদানকে কখনো কোন স্বীকৃতি দেবার কথা পর্যন্ত আমরা ভাবি না।

সেবা অনুবাদ কে অনুবাদ, ছায়া অবলম্বনকে ছায়া অবলম্বনই বলে - মৌলিক বলে চালিয়ে দেয়না। অথচ দুই বাংলায়ই বিদেশী (বিশেষতঃ ইংরেজী) সাহিত্য বাংলায় অনুবাদ করে বা ছায়া অবলম্বন করে লিখে নিজের মৌলিক লেখা বলে চালিয়ে দেয়া লেখকের সংখ্যা অগুনতি। নাম বলতে গেলে গাঁ উজার হয়ে যাবে। আবার সেই লেখা নিয়ে সিনেমাও বানানো হয়েছে - মূল লেখকের উল্লেখ ছাড়াই।

সেবার কিছু লেখকের কাছে শুনেছি অন্য অনেক প্রকাশনীর চেয়ে সেবার পেমেন্ট পদ্ধতিও ভাল। বই প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু কিছুই পাননি এমন অভিযোগ হরহামেশা লেখকদের কাছ থেকে শুনি। বই রিপ্রিন্ট হয়েছে অথচ লেখক তাঁর পাওনা পাননি এমনও শুনি। কিন্তু সেবা নাকি এসব বিষয়েও যথেষ্ঠ ন্যায়ানুগ।

তারপরও সেবার ব্যাপারে কুৎসা করার লোকের অভাব হয়না। এদের বড় অংশ সেবার বই না পড়েই অমন কাজ করেন। বই পড়ে খারাপ হয়ে গেছে এমন উদাহরণ কেউ পারলে দয়া করে আমাকে দেখাবেন - আমি জীবনে দেখিনি। কিন্তু বই না পড়ে খারাপ হয়েছে এমন মানুষ আমাদের চারপাশ ভরে আছে। সেবার বই পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে এমন মানুষও দুনিয়াতে নেই। বিশ্বাস না হলে আমার সাথে বাজী ধরতে পারেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ভুতুম এর ছবি

এই পোস্টটা আপনার মন্তব্য ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যেতো। ধন্যবাদ।
------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সিরাত এর ছবি

আরেকটি অসাধারণ মন্তব্য।

পান্ডবদা, আপনার বয়স কত? চোখ টিপি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ সিরাত।

আমরা দু'জনেই যেহেতু ঢাকায় থাকি তাহলে যে কোন দিন আপনার-আমার দেখা হয়েই যেতে পারে। দেখা হলেই বুঝবেন আমার বয়স কত!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কীর্তিনাশা এর ছবি

আহ্ সেবা প্রকাশনী !

কত কত বই যে পড়েছি! সেবা ছাড়া আমার শৈশব কৈশোরের একটা দিনের কথাও চিন্তা করতে পারি না।

প্রথম বই ছিল বোধহয় - জুলভার্নের 'রহস্যের দ্বীপ'। তারপর আর থামাথামি নেই - তিন গোয়েন্দা, ওয়েস্টার্ন, অনুবাদ, কিশোর ক্লাসিক, কিশোর থ্রিলার, মাসুদ রানা, কুয়াশা বাদ যায়নি কোনোটা।

এখনো মনে আছে 'থ্রি কমরেডস' পড়ে অঝোরে কাঁদার কথা। হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের - শি, রিটার্ন অভ শি, অ্যালান কোয়াটারমেইন-এর সিরিজ, খসরু চৌধুরীর শিকার কাহিনীর বই - কোনটা রেখে কোনটার কথা বলি?

সেবা প্রকাশনী যুগ যুগ জিও !!

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

"ডন ক্যিহোতে" হওয়া উচিত না আসল উচ্চারণ?

ভুতুমদা কে ধন্যবাদ এমন একটা লেখার জন্য। তিন গোয়েন্দার প্রথম পড়া বই "ড্রাগন".. স্কুলের লাইব্রেরী থেকে এনে পড়া। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেলাম। এরপর "সবুজ ভূত".. তারপর একে একে.... মাসুদ রানার প্রথম পড়া বই "বাংলাদেশ" এইবারো ধরা.. আগে নিয়মিত কিনতে হইতো একটা সিরিজ এর বই .. এখন কিনতে লাগলাম দুইটা... পাগলের মতন পড়তাম... খাওয়ার সময়, ঘুমানোর আগে... এমনকি বাথরুমে... এমনো দিন গেসে বাথরুমে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে আছি কোনো হুশ নাই... দরজা ধাক্কা ধাক্কির পর উঠতে গিয়ে দেখি উঠতে পারি না.. পায়ে ঝিঝি (চন্দ্রবিন্দু দিতে পারছি না) ধরে গেসে..

তিন গোয়েন্দা আর রানা মিলে মোট হাজারের উপর বই ছিলো আমার সেবা প্রকাশনী থেকে... তারপরেও ঈর্ষা হত যখন বইয়ের পেছনের চিঠিতে পড়তাম যে কত কত দের সব বই গুলোই কালেকশনে আছে। তিন গোয়েন্দা পড়া বন্ধ করসিলাম "চিলার" বের করা শুরু করার পর থেকে (আরেক ফ্রাঙ্কেন্সটাইন এর কিছু পর থেকে.. এর আগের সব ছিলো).. আর মাসুদ রানা দেশ ছাড়ার পর।

একদিন কলেজ থেকে এসে দেখি আমি চলে যাব বলে মা আমার সব বইগুলো সের দরে বিক্রি করে দিসে।.. মনে হইসিলো আমার কইলজার মধ্যে কেউ ছুরি চালায় দিসে... এখনো তেমন লাগতেসে.. নস্টালজিয়া বড় খারাপ জিনিস
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

ভুতুম এর ছবি

ডন ক্যিহোতেই হওয়া উচিত যতদূর জানি। সেবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এরকম বানানপ্রমাদ চোখে পড়ে, মূল উচ্চারণটা অপরিচিত হবার কারণেই বোধহয়। যেমন - রানা অনেকবারই "রেনো"র জায়গায় রেনল্ট চালিয়েছে। তবে এই ভুলগুলো ক্ষমার্হ ।

আর আমিও ছিলাম আপনারই মতো, এখনও বই ছাড়া খেতে পারি না। বাথরুমে বই নেয়ার জন্য যে আব্বু-আম্মুর কতো গাল শুনেছি। আর রাতে রুমের লাইট আম্মু নিভিয়ে যাবার পর খাটের ওপর দাঁড়িয়ে ডিমলাইটের সামনে বই ধরে পড়তাম। দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সিরাত এর ছবি

তিন গোয়েন্দা চিলার, মাসুদ রানা দেশছাড়া - এগুলো নিয়ে আরো বিস্তারিত চাই। কেউ বলেন।

ভুতুমকে আমার পক্ষ থেকেও ধন্যবাদ এরকম একটা পোস্টের জন্য। এটা নিয়ে সচলে আগে আরো লেখা কেন হল না সেটাই অবাক কান্ড।

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লেখা। নিজের নাম "রকিব হাসান" টা দেখে যারপরনাই আনন্দিত হইলাম। যদিও আমি সেই রকিব হাসান না। ধন্যবাদ

মেঘলা জীবন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সেবা, সেবার বই, সেইসব অনুভূতি... এগুলো নিয়ে এখন লেখা সম্ভব না। আপনারটা পড়েই মাথা আউলা... লেখতে বসলে আর কাজ কর্ম কিছু হবে না। আর মন্তব্যের ঘরে আঁটবেও না।
তবে সেবা নিয়ে সচলায়তনে সবচেয়ে বেশি যিনি লিখতে পারেন... তিনি যে কেন ডুব দিলেন... তার শীতনিদ্রা আর শেষই হইতেছে না... মন খারাপ

আমিও আপনার পোস্ট পড়ে ভাবতেছিলাম, বুড়ো হয়ে গেছি। আমাদের জমানায় ভলিউমের কোনো বালাই ছিলো না। তখনকার প্রচ্ছদগুলো যে কী তীব্র পছন্দ ছিলো... এখন ইচ্ছে করে পুরনো বইগুলো সংগ্রহ করে রাখি। কিন্তু ভলিউমের চেহারা দেখে পছন্দ হয় না। মাঝে মাঝে নীলক্ষেতে পেলে কিনি।

যেসব মানুষ নিয়ে ডকুমেন্টরি বানানোর খায়েশ নিয়ে বসে বসে জীবিকার তাগিদে মাছি মারি, তাঁদের অন্যতম কাজী আনোয়ার হোসেন। একটা বাঁধিয়ে রাখার মতো মানুষ...

কাজীদার ইন্টারভিউ প্র আলো ছেপেছে। তবে সাপ্তাহিক ২০০০এর ইন্টারভিউটা সবচেয়ে সমৃদ্ধ। সেটা পারলে পড়ে দেইখেন।

উনি কিন্তু খুব ভালো গাইতেন। বাংলা সিনেমায় তাঁর বিখ্যাত একটা গান আছে। এই মুহূর্তে গানটা মনে পড়তেছে না।

যারা সেবারে নিয়া নাক উল্টায়... তাগো নাকের ডগায় মৌমাছি কামড় দিক... তখন বুঝবো সেবা কী জিনিস ছিলো...

আর কিছু হোক আর না হোক... সেবা প্রকাশনী আর এইসব অসাধারণ বই না থাকলে এই দেশের কোটি কোটি মানুষ খালি সার্টিফিকেটধারী মূর্খ্য থাকতো। জ্ঞান বলতে কিছু থাকতো না। কোটি কোটি কিশোরের মনের সবকটা জানালা খুলে দিছে সেবা প্রকাশনী। এইটারে অস্বীকার করার কিছু নাই

সেবা রোমান্টিক আমি পড়তাম না। অন্য যা কিছু সেবার... তার কোনোটাই বাদ দেই নাই একটা সময় পর্যন্ত। এখন সেবার বইয়ের মান কমে গেছে... লেখা পড়ে আরাম পাই না আগের মতো। তবু পড়ি মাঝে মাঝে। গত বছর পড়লাম সেবার নতুন সিরিজ... সেবা টিনএজ বা এরকম কী যেন নাম একটা সিরিজের। অন্যগুলো ভালো লাগলো না, তবে কাজী আনোয়ার হোসেনের ইশকুলবাড়ি আর ইতি বই দুটো অসাধারণ লেগেছে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ভুতুম এর ছবি

ইশকুলবাড়ি আমিও পড়লাম কিছুদিন আগে। অসাধারণ বললে কমই হবে।

------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সিরাত এর ছবি

দারুণ একখান মন্তব্য নজরুল ভাই। আমি আসলে আপনাদের দারুণ মন্তব্যের ভিড়ে কি লিখবো বুঝে উঠছি না।

হিমু এর ছবি

গানটা হচ্ছে, এই যে আকাশ, এই যে বাতাস ... বেলা বয়ে যায়, মধুমতী গাঁয়, ওরে মন ছুটে চল চেনা ঠিকানায় ... ।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

তীরন্দাজ এর ছবি

দেশের বাইরে বসেও সেবার কোন বই হাতে এলে এখনও ছাড়িনা। আপনার লেখাটি দারুন লাগলো!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ভুতুম এর ছবি

ধন্যবাদ তীরুদা। সেবার বন্ধনটা বোধহয় এমনই যে স্থান কি বয়সের কারণে তাতে কোন ছেদ পড়ে না।
------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সিরাত এর ছবি

অনেক স্মৃতি। অনেক কৃতজ্ঞতা সেবার প্রতি।

পাঁচ!

ভুতুম এর ছবি

বাব্বাহ! পাঁচ দিয়ে দিলেন! আপনি তো সহজে দেন না পাঁচ। ধন্যবাদ ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সিরাত এর ছবি

আচ্ছা এখন সেবার খবর কি? আগের চেয়েও বেশি স্পীডে বই বের করে যাচ্ছে?

দোকান টোকানে গিয়ে খবর নেয়া দরকার।

ভুতুম এর ছবি

সেবা সেবার হালেই চলছে। আসলে সেবার পাঠককূল হলো ক্লাস ফাইভ থেকে শুরু করে কলেজ কি বেশি হলে ভার্সিটি প্রথম বর্ষের ছেলেমেয়েরা। আমরা যারা একটু বড় হয়ে গেছি তার থেকে, সেবাও যেন ঠিক বুঝে সরে গেছে বর্তমান থেকে অতীতে, আর নতুন যারা উঠতি কিশোর, তাদের কাছে গিয়ে ধর্ণা দিচ্ছে, ঠিক যেমন আমাদেরকে দিয়েছিলো ঐ বয়সে।

----------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

কনফুসিয়াস এর ছবি

চমৎকার একটা পোস্ট। সেবা প্রকাশনী নিয়ে আমার মুগ্ধতার কোন শেষ নাই, কৃতজ্ঞতারও! অনেকদিন আগে একটা ব্লগ লিখেছিলাম এইখানে, প্রিয় সেগুন বাগান নামে।

আমার শুরু গোয়েন্দা রাজু দিয়ে। তারপর একে একে ধরেছিলাম তিন গোয়েন্দা, রোমহর্ষক সিরিজ, কুয়াশা, ওয়েস্টার্ন, রোমান্টিক, অনুবাদ, ক্লাসিক, মাসুদ রানা। দেশে থাকাকালীন সবসময় পড়েছি, এখনও মাথার পাশের বুক শেলফে আছে মুক্ত বিহঙ্গ।

শুধু একটাই সংশোধনী- রেজা-সুজার লেখক কিন্তু আবু সাঈদ নয়, জাফর চৌধুরী। আবু সাঈদ লিখেছিলেন গোয়েন্দা রাজু।

-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ভুতুম এর ছবি

ইইই, বাজে বাজে ভুল করলাম। তবে শুনেছি জাফর চৌধুরীও নাকি রকিব হাসানই। দেঁতো হাসি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আরো ধন্যবাদ আপনার পোস্টটার লিঙ্ক দেয়ার জন্য। চমৎকার লাগলো।

---------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

ভুতুম এর ছবি

ইইই, বাজে বাজে ভুল করলাম। তবে শুনেছি জাফর চৌধুরীও নাকি রকিব হাসানই। দেঁতো হাসি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আরো ধন্যবাদ আপনার পোস্টটার লিঙ্ক দেয়ার জন্য। চমৎকার লাগলো।

---------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

ভুতুম এর ছবি

একই মন্তব্য দুইবার পোস্ট হয়ে গিয়েছে। মডু ভাইজান একটু মুছে দিন না উপরের একটা মন্তব্য আর এই মন্তব্যটা।

--------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

প্রিয়তে... বড় ভাল লাগল লেখাটা... আমি আজকালের মাঝেই এই বিষয়ে লেখা দিতে চাই একটা... সাহায্য করবে কিছুটা?

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

ভুতুম এর ছবি

কীভাবে করতে পারি বলে ফেলো, অবশ্যি করবো।

------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

সেবা'র একটা ওয়েস্টার্ন ছিলো 'অতন্দ্র প্রহরী' দেঁতো হাসি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খাইছে

হাসান মোরশেদ এর ছবি

বিদ্যুৎ মিত্র' র কথা কেউ বললেন না?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ভুতুম এর ছবি

হ্যাঁ তাইতো! বিদ্যুৎ মিত্র তো কাজীদারই আরেক ছদ্মনাম।

------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ছোটদের 'কতোকিছু' শিক্ষার বই বের করলেন বিদ্যুৎ মিত্র । সেসব বই পড়তে পড়তে কতো ছোট বড় হয়ে গেলো হাসি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ভুতুম এর ছবি

হেহ্ হেহ্ হেহ্, তা আর বলতে। চোখ টিপি
---------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এখানে একটা কথা বলে নেয়া ভালো। আজকাল কিন্তু সেবার অনুবাদে ঐ যত্নের ছায়াটা পাই না। জানি না ভুল কী না- তবে কেবল কাজীদার অনুবাদ করা বইগুলোই কেবল আগের মান ধরে রেখেছে। নতুন লেখকদের লেখা /অনুবাদ- অতটা টানে না
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

অতিথি লেখক এর ছবি

কথা মনে হয় সইত্য......
বাকিগুলোর অনুবাদের মান আসলেই সেরকম নেই...

#ওসিরিস

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

চমৎকার একটা লেখা। স্মৃতি-জাগানিয়া লেখা। অনেক কিছু মনে পড়ে গেল। মাসুদ রানার 'ব্ল্যাক ম্যাজিক' আর 'তিক্ত অবকাশ'-এর হাত ধরে আমার সেবা-যাত্রা শুরু। তখন পড়ি ক্লাস ফোর কি ফাইভে। এরপর যে সেবার বইগুলো কীভাবে গিলেছি, তার সীমা-পরিসীমা নেই। তিন গোয়েন্দা, মাসুদ রানা, কিশোর ক্লাসিক, ওয়েস্টার্ন, সেবা রোমান্টিক, কিছুই বাদ দেইনি। তবে 'কুয়াশা' সিরিজটাই সেভাবে পড়া হয়নি।

আমার জীবনে পড়া সেরা কিছু বইয়ের মধ্যে সেবার বইগুলো অবশ্যই থাকবে। বিশেষ করে 'অগ্নিপুরুষ'। এই বই সম্পর্কে কীই বা বলার আছে। আরেকটি বই হলো 'থ্রী কমরেডস'। মনে হয় এর আগে আপনারই আরেক পোস্টে এই বই সম্পর্কে বলেছিলাম। সেবা রোমান্টিকের মধ্যে রোকসানা নাজনীনের বইগুলো দারুণ লেগেছে। লেখিকার অনুবাদ 'স্বপ্নসখা' (মূল: ভিক্টোরিয়া হল্ট) আমার পড়া আরেকটি অসাধারণ বই। আর ওয়েস্টার্নের মধ্যে তুলনামূলক কম-পরিচিত এক লেখকের (নামটা মনে পড়ছে না, খুঁজলেই পাব অবশ্য বইটা) লেখা 'বুনো পশ্চিম' অসাধারণ লেগেছিল। বহুদিন মাথা থেকে এই বইয়ের নেশা নামাতে পারিনি।

সেবার কাছে আসলে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ছোটবেলায় অনেকের কাছেই শুনেছি সেবার বই নাকি বড়োদের জন্য, এগুলো পড়লে নাকি 'খারাপ' হয়ে যাবে সবাই। এরচেয়ে হাস্যকর রকম ভিত্তিহীন কথা আর শুনিনি। আমার মতে, সেবার বইগুলো শুধু 'পাঠক'ই তৈরি করেনি, অনেক 'মানুষ'ও তৈরি করেছে!

তবে এখন আর সেবা-র বই পড়ি না। অনেক রকম কথা শুনি তো... পুরনো সেই ভালোবাসা, চাই না, নষ্ট হোক বা তাতে কোনো আঁচড় পড়ুক।

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

ভুতুম ভাইকে ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য।
সেবা প্রকাশনীকে কৃতজ্ঞতা।

আমি এখনও মাসুদ রানা পড়ি। তিন গোয়েন্দা, ওয়ের্ষ্টানে এখন আর আগের সেই মজা নাই। মাসুদ রানাও কেমন যেন হয়ে গেছেন। কিন্তু তারপরও রানা রানাই। এখনও সময় পেলে রানা হাতে নেই।

জয়তু সেবা প্রকাশনী।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনি কে ভাই বলুন তো! বয়সে তো আমার অনেক ছোটই হবেন... আমার থেকে বয়সে ছোটরাই নিজেদের বুড়ো বুড়ো করছে!
কিন্তু সেবাকে ঘিরে আপনার প্রত্যেকটা ব্যাপারই ঘটেছে ঠিক আমারই মতো করে! ঐ ক্যামলট বুক স্টল থেকে যে কত বই কিনেছি!
পল্টনের বইভাণ্ডার আবিষ্কারও আমার কাছে বেগমের রত্নভাণ্ডার আবিষ্কার করার মতোই ব্যাপার ছিল!
সেবার অফিসে আমিও গিয়েছিলাম। তখন আমি দুধের বাচ্চা, রহস্য পত্রিকায় আমার জীবনের প্রথম ছাপা হওয়া গল্পের সম্মানী আনতে গিয়েছিলাম দুরুদুরু বক্ষে! ভেতরে ঢুকে সেই কাঠের পুল পেরিয়ে। সেবার মতোই রহস্যময় মনে হয়েছিল তাদের বাড়িটাও!
"জামশেদ মুস্তাফির হাড়" এর মতো চমৎকার বইয়ের লেখক কেন যে আর এই চরিত্র নিয়ে লিখলেন না বুঝলাম না! মারাত্মক বই ছিল একটা! কুটি কবিরাজ ছিল গল্পগুলোর নায়ক। কবে পড়েছি, আজ থেকে ১৭-১৮ বছর আগে তো বটেই, কিন্তু গল্পগুলো এখনো মনে আছে আমার। জামশেদ মুস্তাফির সবগুলো হাড় ছিল সোনার। কুটি কবিরাজ সেগুলো খুঁড়ে বের করতে যায়। লেখক তার বন্ধু। বন্ধুকে সে খুশি হয়ে বলে যে, যা তোকে আমি মুস্তাফির পুরো করোটিটাই দিয়ে দেব!
কেউ যদি সত্যি সত্যি আমার কাছে জানতে চায়, আপনি এই জীবনে কী চান? তাহলে বলব, বৃহস্পতিবারদিন হাফ স্কুল শেষ করেই দৌড়ে বাসায় এসে জমিয়ে রাখা বইগুলো পড়তে বসার যে আনন্দ, সেখানে ফেরত যেতে চাই!
শালার যে বুড়ো হতে চায় হোক, আমি এর মধ্যে নেই। ছুটির দিনে দরকার হলে বাচ্চাদের সঙ্গে কাড়াকাড়ি করে বই পড়ব, বিছানায় শুয়ে শুয়ে জানলার ধারে! লোকে আমাকে ইমম্যাচিউরড বলবে? জীবনে বড় আর কিছু করা হবে না? জাহান্নামে যাক! আমি আমার কৈশোরেই আটকে থাকতে চাই!
ধানমন্ডি হোক, বাসাবো হোক, দার্জিলিং হোক আর ভারখয়ানস্ক হোক... এলাকা ভালো লেগে গেছে বলে কিছু লোক তো সেই এলাকাতেই থেকে যায় সারাজীবন!
আমি নাহয় কৈশোরেই থেকে গেলাম চিরজীবনের মতো! সবারই কি প্রাজ্ঞ পুরুষ হতে হবে নাকি?
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

হিমু এর ছবি
ভুতুম এর ছবি

আপনার অভিজ্ঞতাগুলো আমার সাথে মিলে গেলো দেখা যাচ্ছে! ভাল্লাগলো। আর আপনি রহস্যপত্রিকায় লিখতেন!!! বাব্বাহ!

আমি নাহয় কৈশোরেই থেকে গেলাম চিরজীবনের মতো! সবারই কি প্রাজ্ঞ পুরুষ হতে হবে নাকি?

অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি এই কথাটা কোট করে, কী মন্তব্য করা যায় জানি না। এরচেয়ে বড় সাধ কি থাকে কারো?

----------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

দুর্দান্ত এর ছবি

কেউ যদি সত্যি সত্যি আমার কাছে জানতে চায়, আপনি এই জীবনে কী চান? তাহলে বলব, বৃহস্পতিবারদিন হাফ স্কুল শেষ করেই দৌড়ে বাসায় এসে জমিয়ে রাখা বইগুলো পড়তে বসার যে আনন্দ, সেখানে ফেরত যেতে চাই!

আমাকে আপনার দলে নিন।

স্বপ্নহারা এর ছবি

অনেক স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন। স্কুলের স্যাররা সেবা'র বই পাইলেই পিটাইত! সবার মন্তব্য পড়ে খুব ভাল লাগল...সেবার বই হাভাতের মত গিলতাম! আর একটা কথা, যে বই পড়ে সে অন্যায় করতে পারেনা!

-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মামুন হক এর ছবি

এই লেখাটা পড়ে রেখেছিলাম অনেক আগেই।
এক সাথে হাজারো স্মৃতি মনের পর্দায় ভেসে উঠে ভুদাই বানিয়ে দিয়েছিল, আজকে আবার পড়েও বোবা হয়ে গেলাম। আহ আশির দশকের সেই দিন গুলি!
সেবা আমার প্রথম প্রেমের নাম, সেবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
কাজীদা'কে নিয়ে একটা ডকু বানানো দরকার।

ভুতুম এর ছবি

মামুন ভাই, আপনার না আশির দশকের বখে যাওয়া দিনগুলি নিয়ে একটা লেখা দেয়ার কথা??? কৈ কৈ কৈ?

-----------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

গৌতম এর ছবি

আমি আজকে যে দু'চারটা বই পড়ি, তার প্রধান কৃতিত্ব সেবা প্রকাশনীর। সেবা প্রকাশনীই আমার বই পড়ার অভ্যাসটা তৈরি করেছে। ইনফ্যাক্ট এখনও আমি ঢাকার বাইরে যাওয়ার সময় ১০/১২টা করে সেবার বই কিনে নিয়ে যাই। সে হিসেবে প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ১/২টা বই আমার এখনও পড়া হয়।

কাজীদার একটা সাক্ষাৎকার নেওয়ার চেষ্টা আমি করতে পারি। জানি না সফল হবো কিনা। সেক্ষেত্রে তিনি যদি সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হন, তাহলে প্রশ্নগুলো কিন্তু আপনাদেরকেই তৈরি করে দিতে হবে। রাজি?

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ভুতুম এর ছবি

আমি নির্দ্বিধায় রাজি। সাক্ষাৎকার নিয়ে ফেলেন, সেটা স্টিকি করার জন্য আন্দোলন করবো।

--------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

অসামাজিক এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখক কে লেখাটার জন্য।
আমার বই পড়ার অভ্যাস শুরু হয়েছিল সেবা কে দিয়া।দেশের বাড়িতে ঈদ করতে যেয়ে আব্বুর বুকশেলফ এ পেয়ে গেলাম সুইস ফ্যামিলি রবিনসন।আহা সে কি অনুভুতি! জীবনে প্রথমবার এর মত এডভেঞ্চার এর স্বাদ পেলাম বই এর পাতায়।এর পরে আর আমাকে থামাতে পারে নি কেউ।কিশোর ক্ল্যাসিক দিয়ে শুরু করে ডুবে গেলাম তিন গোয়েন্দা আর রানায়।কি অসাধারণ ই ছিল না দিন গুলো! সায়েন্স ফিকশন এর মজা পেলাম Jules Verne এর লেখা পড়ে।এর পরে একবার অন্য আর এক প্রকাশনীর অনুবাদ পড়তে যেয়ে হাসি পেয়েছিল।এত নীরস আর উত্তেজনাহীন অনুবাদ!

মাসুদ রানার চারিদিকে শত্রু লুকিয়ে রেখেছিলাম আলমারির নিচে...সময় পেলেই বইটা নিয়ে চলে যেতাম ছাদে...

ক্লাস থ্রি তে দুই বন্ধু কে নিয়ে বানিয়েছিলাম তিন গোয়েন্দা...আমদের সেই বানানো card এখনো আছে আমাদের কাছে...

ক্লাস সিক্স এ সস্তায় সেবার বই ভাড়া নেয়ার জন্য স্থানীয় লাইব্রেরির সদস্য হওয়ার জন্য ৫০ টাকা চুরি করে খেয়েছিলাম আম্মুর পিটুনী...
বাসা থেকে কোনো টাকা দেয়া হত না হাত খরচ বাবদ...তখন তিন গোয়েন্দা এর দাম ছিল ২৫ টাকা আর কিশোর পত্রিকা ১২ টাকা...সারা মাস এখান থেকে ওখান থেকে ১ টাকা ২ টাকা যোগাড় করে ২৭ টাকা বানাতাম এ দুটো কেনার জন্য...

নিজেকে কোনে সময় ভাবতাম আইভান হো...হতে চেয়েছিলাম টম সয়্যার...কখনো বা হাক ফিন...

অনেক ছোটো বেলায় বই মেলায় সেবার স্টলে যেয়ে একটা বুকলেট পেয়েছিলাম।তাতে ১৯৯৩ সাল অব্দি সেবার প্রকাশিত সব বই এর সংক্ষিপ্ত কাহিনি লেখা ছিল...কত অসংখ্যবার যে কোনো বই না পেয়ে এই বুকলেট টাই পড়েছি...১৬ বছর আগের সেই বুকলেট এখনো সযত্নে সংরক্ষিত আছে আমার কাছে...

আমার অনেক বন্ধু কে দেখেছি তাদের ড্যান ব্রাঊন বা হ্যারি পটার বা বা পাওলো কোয়েলহো বা গ্যাব্রিয়েল গারসিয়া মারকুয়েজ ইত্যাদি যাবতীয় বিশ্ব সাহিত্য পড়া আছে...

কিন্তু অনেকেই পড়েনি কাঊন্ট অফ মন্টীক্রিস্টো বা থ্রী মাসকেটিয়ারস বা দ্যা এডভেঞ্চারস অফ হাকলবেরি ফিন অথবা দ্যা প্রিন্স এন্ড দ্যা পপার অথবা তালিসমান।আমি তখন তাদের বলি তাহলে কি পড়েছিস?

কাজিদার লিখা রবিন হুড আমার মতে রবিনহুড কে নিয়ে লেখা বই এর তালিকায় সবচাইতে সেরা।

আমার শৈশব এবং কৈশর এর একটা বড় অংশ কেটেছে সেবার বই পড়ে এবং আজ আমি যে রকম মুক্ত মানসিকতার অধিকারী এর পিছনে সেবার গড়ে দেয়া এই বই পড়ার অভ্যাস এর অবদান সবচেয়ে বেশি...

ধন্যবাদ সেবা তোমাকে !

ভুতুম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ। এরকম হাজার স্মৃতি সেবাকে নিয়ে মনে হয় বাংলাদেশের প্রতিটি বই পড়ুয়ারই আছে!

-------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সত্যবাক এর ছবি

ষষ্ঠ পান্ডবের সাথে আমি একমত। 'ভয়াল' সিরিজটা অসাধারণ ছিল। কাজীদা বেনামে লিখতেন। কয়েকটি সংখ্যার পর আর বেরোয়নি। তারপর বের হয় কুয়াশা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হাত মিলান রে ভাই হাত মিলান। এতোদিন পরে আমার মতো আরেক জন বুড়া পাওয়া গেলো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নোবেল 403 এর ছবি

লেখাটা পড়তে পড়তে পুরানো দিনে ফিরে গেলাম । কি যে পাগল ছিলাম তিন গোয়েন্দা, রাজু,কুয়াশা,রানা, ওয়েস্টার্ন,অনুবাদ...এইসবের জন্য--লিখে শেষ করা যাবে না।

ওয়েস্টার্ন সিরিজে কেউ সাবাডিয়া'র নাম বলল না !

প্রথম যখন ঢাকায় যাই-ভার্সিটি ভর্তি কোচিং করতে--২ দিন সেগুনবাগিচা কাজীদার বাসার সামনে গিয়ে বসে ছিলাম--দেখা করার জন্য;শালার দারোয়ান ঢুকতে দেয়নি।পরে অবশ্য দোতালার গুদাম দেখে কম দামে বই কিনে নিয়ে এসছিলাম আর কাজীদাকে চিঠি লিখেছিলাম উনার দারোয়ানের বে-আদবী নিয়ে; বিনিময়ে কাজীদা আমাকে উনার একটা পাস্পোর্ট সাইজের ছবি দিয়েছিলেন--অটোগ্রাফ সহ--ডাকযোগে এবং টেলিফোনে কথাও বলেছিলাম উনার সাথে।

মজার ব্যপার কী--উনার সাথে ফোনে কথা বলার সময় টিউশনী চেয়েছিলাম--তখন L-1,T-1 এ পড়ি ! উনি চেস্টাও করেছিলেন --যদিও সফল্কাম হননি।

এখনও ট্রেনে ঢাকা-চিটাগং জার্নি করলে একটা মাসুদ রানা কিনি--নতুন বইগুলা যদিও আগের মত ভাল হয় না

আর মুক্ত বিহঙ্গ বইটা উইলবার স্মিথ এর Cry Wolf অবলম্বনে লেখা ।

নিঃসঙ্গ পৃথিবী এর ছবি

চলুক জোস পোস্ট।

সেবা প্রকাশনী রকস। এই একটা জায়গায় সবাই একমত।

তারেক অণু এর ছবি

কী অপূর্ব স্মৃতিচারণ! এক যুগ আগের পোষ্ট এখনো সমান প্রাসঙ্গিক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।