করোনারোগ নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত দেয়া বন্ধ করুন ড. বিজন, দোহাই লাগে।

সজীব ওসমান এর ছবি
লিখেছেন সজীব ওসমান (তারিখ: বিষ্যুদ, ০২/০৭/২০২০ - ১:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আপনার সবাই ইতিমধ্যেই জানেন, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহুল আলোচিত যেই কিট তৈরি হয়েছে সেটার প্রধান গবেষক ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বেশ আলোচনায় এসেছেন গণমাধ্যমে এই কারনে। কিট তৈরির সাফল্যের কারনে তাকে ধন্যবাদ দেয়াই যায়। আমাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অক্র গড়ে উঠেছে কিনা সেটা বের করতে পারে তার কিট, ৬০-৭০ শতাংশ সঠিকভাবে। তিনি কে, কী করেছেন ইত্যাদি নিয়ে মোটামুটি সকলেই কিছুটা জানি। আমি আজকে অন্য কথা বলছি।

নূন্যতম জীববিজ্ঞান জানা মানুষের কাছে বেশ বেদনার এবং বিরক্তির কারন হয়েছেন এই লোক। সেই মার্চ মাস থেকে ক্রমাগত করোনারোগ এবং এর ভাইরাস নিয়ে তিনি 'বিশেষজ্ঞ মতামত' দিয়ে আসছেন যা বহু দিক দিয়ে ভ্রান্ত, ক্ষতিকর এবং হাস্যকর। কিছু ক্ষেত্রে তার অণুজীববিজ্ঞান এবং অক্রবিজ্ঞানের (immunology) জ্ঞান নিয়ে রীতিমত প্রশ্ন তোলা যায়। তার বক্তব্যগুলি জনস্বাস্থ্যের জন্য প্রচন্ড বাধাস্বরূপ, মানুষকে বিভ্রান্ত করছে এবং ফলে রোগের প্রকোপ বাড়া এবং মানুষের স্বাস্থ্যক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা বিপুল মাত্রায় বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমি তার দেয়া গত ৩ মাসের কিছু সাক্ষাৎকার থেকে কয়েকটা উদাহরন মাত্র তুলে ধরছি। সাক্ষাৎকার বা খবরগুলি পড়তে চাইলে শিরোনামগুলির উপর ক্লিক করুন।

সাক্ষাৎকার ক

গবেষণায় উপসর্গহীনদের লালায় যে পরিমাণ করোনাভাইরাস পাচ্ছি, তা অন্যদের সংক্রমিত করবেই
প্রকাশিত ডেইলিস্টার, জুন ১০।

এখান থেকে অনেকগুলি উদাহরন তুলে ধরা সম্ভব। আমি কয়েকটা দিচ্ছি।

১।

সাধারণত কোনো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলে তা এক বছরেরও বেশি সময় শরীরে থাকে। অন্তত এক বছর তো থাকবেই, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

অক্রবিজ্ঞানের কিছুই না জেনে কথা বলছেন। আমাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বা অক্র (immunity) সব অক্রজান (antigen) বা জীবাণুর বিরুদ্ধে একইকরমভাবে কাজ করেনা। একেকটা একেকরকম। এমনকি প্রায় সময়ই একইরোগের ক্ষেত্রে একেক মানুষের জন্য একেকরকমও হতে পারে। কোন জীবাণুর ক্ষেত্রে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে কয়েকদশক, কোন জীবাণুর ক্ষেত্রে কয়েক মাস। অন্ধভাবে সেজন্য বলে দেয়ার উপায় নাই যে সাধারণভাবে সব রোগের ক্ষেত্রেই কোন অক্র এক বছরের বেশি থাকে। তার ওপর আছে ভাইাসের পরিব্যক্তি (mutation) এর ক্ষমতা যেটা অক্রের কালকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। পৃথিবীব্যাপি বিজ্ঞানীরা এখনও হিমশিম খাচ্ছেন এই অনুমান করতে যে কতদিন নতুন করোনাভাইরাসের অক্র থাকবে। এখানে আমি একটা সূত্র উল্লেখ করে দিচ্ছি। ফলে বোঝা যাচ্ছে এখনও আমরা নিশ্চিত না নতুন সার্স ভাইরাসটির অক্র কতদিন থাকবে আমাদের দেহে।

সূত্র:
https://www.the-scientist.com/news-opinion/studies-report-rapid-loss-of-covid-19-antibodies-67650

২।

যদি দু-চারটা ভাইরাস শরীরে ঢুকেই যায় তাহলে সেটা ভ্যাকসিনের মত কাজ করবে

কিভাবে সম্ভব। আমরা নিশ্চিত জানিনা সার্স-কোভ ২ এর কয়টা অণু আমাদের দেহে ঢোকার ফলে করোনারোগ প্রকোপ ফেলে এবং এর চেয়ে কম জীবন্ত ভাইরাস ঢুকলে আমাদের রোগটার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে কিনা। সেখানে ২/৪ টা ভাইরাস দেহে ঢুকলেই টিকার মতো কাজ করবে বলাটা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য। আমি এখানে একটা সূত্র দিচ্ছি। দেখুন। বলা হচ্ছে খুব কম ভাইরাসেই রোগটা হতে পারে। এখন ২/৪ টা ভাইরাসের কারনে অক্র তৈরি হবে সেটা ড. বিজন জানলেন কোথা থেকে?

সূত্র:
https://www.statnews.com/2020/04/14/how-much-of-the-coronavirus-does-it-take-to-make-you-sick/

৩।

আমার ২০০৩ সালেই ইম্যুনিটি তৈরি হয়েছে

কী বলবো বলেন। চরম হাস্যকর কথা। উনি ২০০৩ সালে সার্সের প্রথম ধরনের ভাইরাসটা নিয়ে কাজ করছিলেন বলে বলছেন। তখন ওনার এই রোগে আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছিলো কিনা সেটা আমরা জানিনা।

যাই হোক, কথা সেটা না। কথা হলো সার্স-১ এর বিরুদ্ধে যদি অক্র তৈরি হয় তবে সেটা সার্স-২ এর বিরুদ্ধেও কাজ করবে বলে দুনিয়ার কোন বিজ্ঞানী প্রমাণ করেন নাই। হওয়ারও কথা নয়। কারন সার্স-১ এর বিরুদ্ধে অক্র মাত্র ২ বছর থাকে দেহে। ড. বিজন ১৭ বছর ধরে সেই অক্রক বা এন্টিবডি ধরে রেখেছেন কিভাবে বলেন? সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, চাপাবাজি কথাবার্তা। নিচের বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রটি দেখুন।

সূত্র:
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC2851497/

৪।

আমি মনে করি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কিছু নয়। যদি হতো তাহলে আজ ভ্যাকসিন থাকত। ২০০৩ সালে সার্স করোনাভাইরাস এসেছিল। আজ ২০২০ সাল। এত দিনেও কেন করোনাভাইরাসে ভ্যাকসিন তৈরি হলো না? এই প্রশ্ন আমি তাদের বারবার করেছি।

টিকা আবিষ্কার অআকখ জানলে এই কথা বলতেন না। একেক রোগের টিকা একেক ধরনের হয়, একেকরকম সময় লাগে। আমরা জানি এখনও বহু রোগের টিকা আবিষ্কার করতে পারেন নাই দুনিয়াজোড়া বিজ্ঞানীরা, বহু চেষ্টা করেও। এইডসের কথাই যেমন ধরুন। স্মলপক্স বা গুটিবসন্ত পৃথিবী থেকে নির্মূলের ক্ষেত্রে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা যদি জানতেন তবে এতো বাজে কথা বলতেন না। তার উপর সার্স-১ এর যেই ভাইরাস তার বিরুদ্ধে টিকা আবিষ্কার শুরু হয়েছিলাো কিছু, কিন্তু তৈরির আগেই রোগটির প্রকোপ দুনিয়াজুড়ে কমে যায়। টিকা আবিষ্কারের প্রয়োজন হয়নাই। আর সার্স-১ এর টিকা সার্স-২ এ কাজ করবে এমনটা কোন গবেষকই মনে হয় দেখাতে পারেন নাই এখনও। কারনগুলো এখান থেকে পড়ে নিতে পারেন।

সূত্র:
https://theconversation.com/the-mysterious-disappearance-of-the-first-sars-virus-and-why-we-need-a-vaccine-for-the-current-one-but-didnt-for-the-other-137583

৫।

বাংলাদেশের যে তাপমাত্রা, এখানে বাতাসে হিউমিডিটি অনেক বেশি। এই ভাইরাসটি উচ্চ তাপমাত্রা এবং উচ্চ হিউমিডিটিতে টিকতে পারে না।

আবার বলছেন? হেহে.. এটা দেশে কেমন প্রভাব ফেলেছে বুঝতেই পারছেন। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশগুলাতে এখন গ্রীষ্ম চলছে। আপনি কোথা থেকে এই তত্ত্বের সারবত্তা তৈরি করলেন আবার? সত্যি কথা হলো আমাদের দেশের মতো আবহাওয়া মোটেই করোনা নির্মূল করেনা।

সূত্র:
https://www.nytimes.com/interactive/2020/05/21/opinion/coronavirus-warm-weather-summer-infections.html

৬।

মাস দুয়েকের মধ্যে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যাবে।

কিভাবে জানেন? পৃথিবীর বড় বড় গবেষণা সংস্থাগুলা এই অনুমান করতে হিমশিম খাচ্ছে। এখানে হার্ড ইম্যুনিটি বা যূথাক্রের মতো ক্ষতিকর ধারণাকেও উৎসাহ দিচ্ছেন। কোন মাপেই আমাদের দেশের মানুষের অধিকাংশের অক্রক তৈরি হয়ে যাওয়াটা সম্ভবপর না। কোন এলাকার কতসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত তা নিয়ে নিচে দেয়া জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যভাণ্ডার অনুসরন করতে পারেন।

সূত্র:
https://coronavirus.jhu.edu/map.html

৭।

সবচেয়ে বড় কথা যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তারা নির্ভয়ে সামনে এসে কাজ করতে পারেন। এমনকি তারা মাস্ক না পরেও কাজ করতে পারবেন। যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তাদের পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

আরেকটা অতি অতি অতি ক্ষতিকর মন্তব্য। মানুষকে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলবেন এই লোক। এই ধারণাটা নিয়ে কিভাবে উনি নিশ্চিত হচ্ছেন কে জানে যেখানে সিডিসি এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে সবসময় মাস্ক পড়ে থাকতে, অক্রগুণ পাওয়ার পরেও। মোট কথা হলো এটা নিয়ে নিশ্চিতভাবে বলতে পারার সময় এখনও সম্ভবত আসেনাই। পড়ে দেখতে পারেন।

সূত্র:
https://theconversation.com/am-i-immune-to-covid-19-if-i-have-antibodies-140524

সাক্ষাৎকার খ

দ্বিতীয়বার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সম্ভাবনা নেই
প্রকাশিত ডেইলিস্টার, জুনের ২৮ তারিখ।

১।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের শরীরে তিন ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। প্রথমে আইজিএ, এর পরে আইজিএম এবং শেষে তৈরি হয় আইজিজি। আইজিএ দেহে প্রায় ৫০ দিনের মতো থাকে। আইজিএম পাঁচ থেকে ছয় মাসের মতো এবং আইজিজি দেহে থাকে এক থেকে দুই বছরের মতো। কোভিড-১৯ পজিটিভের শরীরে দুই বা তিন রকমেরই অ্যান্টিবডি তৈরি হবেই।

কোন এন্টিবডি বা অক্রকের স্থায়িত্বই দুই মাসের বেশি হয়না কখনই। যেটা হয় সেটা হলো স্মৃতিকোষ তৈরি হওয়া যেটা কোন জীবাণুকে চিনে নিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা অক্রক তৈরি করতে থাকে। অক্রক-কেন্দ্রিক রোগপ্রতিরোধ এভাবেই হয়। কতদিন কোষের স্মৃতি থাকে সেটা হলেো কথা। সার্স-১ এর ক্ষেত্রে সেটা ২ বছর প্রায়। সার্স-২ এর ক্ষেত্রে আমরা এখনও জানিনা। ড. বিজন কিভাবে জানলেন সেটা আমি জানিনা। তিনি বারবার সার্স-১ এর উদাহরণ দিচ্ছেন। আমরা স্পষ্ট দেখতে এবং বুঝতে পারছি দুটো সার্স ভাইরাসের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। এখানে একটা চিন্তার খোরাক দিলাম।

সূত্র:
https://www.clinicalmicrobiologyandinfection.com/article/S1198-743X(20)30171-3/fulltext

২।

এই ভাইরাসটি নতুন। কিন্তু, আমার কাছে নতুন নয়। করোনাভাইরাসের সঙ্গে সার্স ভাইরাসের ৮২ শতাংশ মিল আছে। সার্স ভাইরাস আমরা সিঙ্গাপুরের ল্যাবে তৈরি করেছি, গবেষণা করেছি, শনাক্তের কিট উদ্ভাবন করেছি ২০০৩ সালে। এখন করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছি, কিট উদ্ভাবন করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এখন পর্যন্ত কেউ দ্বিতীয়বার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তেমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এটা জানতে সুখকর যে আমাদের কোন গবেষক আগের সার্স ভাইরাস নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু দুঃখজনক যে সেই প্রচেষ্টা তাকে ভাইরাসবিজ্ঞান এবং অক্রবিজ্ঞান নিয়ে কিছুই শেখায়নি প্রায়। ৮২ শতাংশ মিল কোন ভাইরাসের সাথে ভাইরাসের থাকা অনেক ভিন্নতা আনতে পারে তাদের মধ্যে। মানুষের মৃত্যু কতগুণ হবে সেটাও নির্ভর করতে পারে এর ফলে। তাদের মধ্যে যে পার্থক্য থাকতে পারে কতটুকু সেটা নিয়ে একটা গবেষণাপত্র যোগ করে দিলাম। ব্যাপার হলে সেই একই, নিশ্চিতভাবে বলার মতো করে আমরা জানিনা।

সূত্র:
https://www.pnas.org/content/117/26/15193

সাক্ষাৎকার গ

দেশের ৩০-৪০ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত
প্রকাশিত ১ জুন, সিলেটটুডে২৪।

১.

আমি মনে করি আমাদের দেশে এরই মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে গেছেন। তবে তারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তারা যে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা হয়তো জানেন না। হয়তো সামান্য জ্বর হয়েছে, কাশি হয়েছে, দুর্বলতা অনুভব করেছেন।

দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ মানে প্রায় ৭ কোটি মানুষ। সারা পৃথিবীতেই এতো আক্রান্ত হয়নাই।

সম্পূর্ণ প্রমাণহীন মনগড়া কথা। কোন প্রমাণ নাই। পৃথিবীর তাবৎ বড়বড় গবেষক/বিজ্ঞানীরাই এটা বলতে পারবেন না। যেসব দেশে অনেক বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে সেখানেই ৫ শতাংশের বেশি আক্রান্তের সংখ্যা হবেনা।

২.

উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। ইউরোপের মানুষের ইমিউন ব্যবস্থা ‘স্ল্যাগিশ’।

ভুল মন্তব্য, বিশেষ করে করোনার ক্ষেত্রে। আমাদের দেশের মানুষে শুধুমাত্র অনেক অন্যরোগের প্রতি অক্র বা প্রতিরোধ আছে বলে সম্পূর্ণ নতুন ভাইরাসের বিরুদ্ধেও সেটা থাকবে এমন কোন কথা নাই। ইউরোপ হয় এমন কোন রোগে আমরাও খুবই আক্রান্ত হতে পারি।

সাক্ষাৎকার ঘ

করোনার তীব্রতা কমেছে, এক মাসে হার্ড ইমিউনিটি দেখা যাবে।
প্রকাশিত ৩১ মে, জাগো নিউজ।

শিরোনামটা ভিন্ন হলেও আগের সাক্ষাৎকারটা একই। তবে এই সাক্ষাৎকারের শিরোনামটার কারনে আবার যোগ করলাম। বিশেষ এক ক্ষতিকর মনোভাব ড. বিজন পোষণ করেন বিধায়। বলছি।

হার্ড ইম্যুনিটি বা যূথাক্র এর কথা বেশ আগে থেকেই কিছু গবেষক প্রচার করলেও এটা বিশেষভাবে একটা ভয়ঙ্কর মনোভাব। একে ছড়ানোটাও অপরাধের সামিল হতে পারে। জন্স হপকিন্সের একটা লেখা আমি নিচে দিয়ে দিচ্ছি। পড়তে পারেন। আমি ছোট করে বলে দেই।

কত শতাংশ মানুষ আক্রান্তের ফলে কত শতাংশ মরছে তার হিসাব করলে বোঝা সম্ভব যে আপনি যেই হার্ড ইম্যুনিটি কথা বলছেন তার জন্য কত মানুষের প্রাণ যেতে হবে। নিউইয়র্কে যেমন, ৮৪ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজার মরে গিয়েছেন এই রোগে ১৫-২১ শতাংশ আক্রান্তের মধ্যে। এই শতাংশটাও উচ্চহার হিসেবে ধরা। যূথাক্রের জন্য আপনার আরও বেশি মানুষকে রোগাক্রান্ত করতে হবে, বিশেষজ্ঞরা বলেন অন্ততঃ ৮০ শতাংশ। তার ফলাফল কী ড. বিজন? কত মানুষকে মারতে চান? একই হিসাবে কত লাখ মানুষ বাংলাদেশ মারা যাওয়ার বিনময়ে যূথাক্র আনয়ন হবে সেটার হিসাব কি করছেন?

তিনি বলছেন -

হার্ড ইউমিনিটিতে পৌঁছাতে হলে ৮০ ভাগ মানুষকে আক্রান্ত হতে হবে। যা আগামী এক মাসের মধ্যে ঘটতে পারে বলে আমি মনে করি।

এক মাস তো পার হলো। কিখবর আপনার আলপটকা, দায়িত্বজ্ঞানহীন ভবিষ্যদ্বাণীর?

সূত্র:
https://coronavirus.jhu.edu/from-our-experts/early-herd-immunity-against-covid-19-a-dangerous-misconception

সাক্ষাৎকার ঙ

করোনা থেকে রক্ষায় বিজ্ঞানী ড. বিজনের ঘরোয়া চিকিৎসা
৫ মে, বাংলানিউজ২৪

সহজ পদ্ধতি হচ্ছে বেশি কড়া না হালকা রং চা বারবার খাওয়া, গরম পানি দিয়ে গারগেল করা। এর চেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে আদা, লবঙ্গ ও একটা গোলমরিচ পানি মিশিয়ে গরম করলে কালোমতো একটা রং হবে। এর সঙ্গে সামান্য মধু বা চিনি দিয়ে চায়ের সঙ্গে খেলে অথবা এই পানি দিয়ে গারগেল করতে হবে।

এর ফলে গলায় যে ভাইরাসগুলো থাকে সেগুলো মারা যায়। এছাড়াও গলায় গরম লাগার ফলে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। রং চায়ের মধ্যে কিন্তু আবার এন্টিসেপ্টিক গুনাগুণও রয়েছে। বারবার শুকনো কাশির ফলে গলার টিস্যু ফেটে যেতে পারে। চা এই ইনফেকশন রোধ করে।

অবৈজ্ঞানিক, ভুল, বানোয়াট কথা। এমন পথ্য শরীরকে ভালো রাখতে পারে হয়তো, কিন্তু করোনার ক্ষেত্রে কাজ করবে এমন কোন প্রমাণ নাই। বিশেষ করে তিনি যেখানে বলছেন ভাইরাসগুলো মারা যাবে, সেটা সর্বৈব মিথ্যা কথা।

শেষকথা

কোন মানুষ যখন তার আওতার বাইরে গিয়ে কথা বলা শুরু করেন তবে সেবিষয়ে অগভীর, ভুল এবং স্বাস্থ্যগত ব্যাপার হলে প্রচন্ড ক্ষতিকর কথা বলতে থাকেন। ড. বিজন কুমার শীলের ক্ষেত্রে এরকমটা হয়েছে। কেন ক্ষতিকর? দুয়েকটা কারন বলছি।

  • ১. প্রথমতঃ তিনি করোনাভাইরাস সম্বন্ধে ভুল ধারণা ছড়িয়ে দিচ্ছেন মানুষের মধ্যে। যেখানে গবেষক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন জনগণকে সচেতন করতে সেখানে বিশেষজ্ঞ সেজে ক্রমাগত ভুল কথা বলতে থাকলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হবেন এবং যেহেতু তিনি একজন আলোচিত মানুষ সেহেতু তার কথা বিশ্বাস করবেন।

  • ২. বিপজ্জনক ধারণাগুলি, যেমন যূথাক্র বা হার্ড ইম্যুনিটি তৈরির হয়ে গিয়েছে বা হবে যদি বলতে থাকেন তবে সাধারণ মানুষ সুরক্ষা নেয়া ভুলে যাবে, এতে করে করোনারোগ আরও বিস্তৃতি পাবে। মানুষ চিকিৎসা নিতে চাইবেনা। আরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটবে।

  • ৩. ভুয়া চিকিৎসার কথাগুলি বললে সেই অনুযায়ী আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে গেলে মৃত্যু ঘটতে পারে।

  • ৪. অনেক বড় যেই ক্ষতিটা হচ্ছে তা হলো বিজ্ঞানী, গবেষক আর বিশেষজ্ঞদের ওপর থেকে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস উঠে যাওয়া। তাদের কথাকে গুরুত্ব দিতে অস্বীকার করা ইত্যাদি। দেশের জন্য অনেক বছরের ক্ষেত্র হিসাব করলে এটা একটা অপুরণীয় ক্ষতি।

বুঝতে পারি ড. বিজন কেন এসব করছেন। খ্যাতির মোহ। নাহলে একনাগাড়ে ক্রমাগত এবং পড়াশোনা না করে বানোয়াট কথা বলতে থাকাটা সম্ভব নয়। এখানে সাংবাদিকদেরও দায় আছে। ড. বিজন যে বিষয় পারদর্শি নন সেবিষয়ে প্রশ্ন করা বা জানতে চাওয়াটা তাকে আরও সাহায্য করে মিথ্যা ছড়াতে। সাংবাদিকদের দায়িত্ব আমি বলবো বেশি করে কিট টা নিয়ে প্রশ্ন করা। কিট কিভাবে কাজ করে সেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র কথাও কিন্তু ড. বিজন বলেন নাই। কোন অক্রক (এন্টিবডি) ব্যবহার করা হচ্ছে, কিরকম অক্রজানের (এন্টিজেন) বিরুদ্ধে কাজ করে ইত্যাদি ইত্যাদি আমরা জানিনা। শুরুতে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র এটা যদিও লুকিয়ে রাখতে চেয়েছেন অন্য কেউ বানিয়ে ফেলবে এই ভয়ে। তারপরও, ড. বিজনকে যদি প্রশ্ন করতেই হয় তবে কিট নিয়ে প্রশ্ন করুন, করোনা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত চেয়ে নয়।

সাধারণ মানুষের কাছে অনুরোধ থাকবে কিট ছাড়া ড. বিজন কুমার শীলের অন্যান্য বক্তব্যগুলো সংশয়ের চোখে দেখতে। তিনি যা বলেন তার বেশিরভাগই যেহেতু ভুল কথা সেহেতু আমরা চাইবোনা কেউ বিভ্রান্ত হোক। আর যারা তার সহকর্মী, অণুজীববিজ্ঞানী, গবেষক ইত্যাদি আছেন তারা ড. বিজনকে জবাবদিহি করতে অনুরোধ করতে পারেন। তাকে জিজ্ঞেস করুন কেন তিনি এমন কথা বলছেন। আপনাদের জন্যই তো এটা হুমকিস্বরূপ।


পরিভাষা

immunity = অক্র
antibody = অক্রক
antigen = অক্রজান
herd immunity = যূথাক্র
immunology = অক্রবিজ্ঞান


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

একখান পরিভাষা ভুল হইছে, চতুর্থটা আর কি! ঐটা হবে শক্তাক্র (তথ্যসূত্রঃ ইত্তেফাক অনলাইন ডেস্ক) দেঁতো হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Sabiha এর ছবি

এই একটা বিপদ সায়েন্স নিয়ে!জনগনের কাছে গিয়ে তা সায়েন্স ফিকশন হয়ে যায়

হিমু এর ছবি

সাংবাদিকদের উচিত কোনো প্রসঙ্গে একাধিক বিজ্ঞানীর, যারা স্বার্থের সূত্রে পরস্পর জড়িত নন, মন্তব্য সংগ্রহ আর প্রকাশ করা। বিজ্ঞান যে কোনো বিজ্ঞানীর নিজস্ব বক্তব্য নয়, বরং বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত যুক্তি ও প্রমাণসমর্থিত প্রবন্ধের বক্তব্য (যা সমতন গবেষকদের অনুমোদন পেয়েছে), এটা দেশের অধিকাংশ মানুষই বোঝেন না, সাংবাদিকরাও বোঝানোর চেষ্টা করেন না। ডক্টর শীলের উচিত করোনা প্রসঙ্গে কোনো কথা বললে তার সমর্থনে বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রবন্ধের সূত্র যোগানো।

সংযোজন: পিয়ার রিভিউয়ের একটা ছিমছাম বাংলা চোখে পড়লো: সামতনিক সমীক্ষা। এখন থেকে এটা ব্যবহার করবো।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সংযোজনটি জানা থাকল, ভবিষ্যতে আমিও ব্যবহার করব। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

পুনশ্চঃ সামতনিকের সাথে peer-এর অর্থগত যোগসূত্রটি ধরতে পারিনি। ইয়ে, মানে...

পুনঃপুনশ্চঃ সমীক্ষা কথাটি অনলাইন পত্রিকাগুলি "জরিপ" অর্থে বহুল প্রচলিত করে ফেলেছে। মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

হাসিব এর ছবি

বিপ্লবে বাধা দেবেন না জনাব!

Javed Ikbal এর ছবি

দুর্দান্ত পোস্ট। পরিভাষাও পছন্দ হয়েছে। এগুলি কী আপনার উদ্ভাবন?

পলাশ  এর ছবি

একটু ভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করি।
Immunityর বাংলা হিসেবে অনাক্রম্যতা চালু আছে, বহুল প্রচলিত না হলেও। Immunity শব্দের সংশ্লিষ্ট শব্দগুলোও সে ধারাবাহিকতায় উল্লেখ আছে নানান জায়গায়। যেমনঃ
Immunity - অনাক্রম্যতা
Immunology- অনাক্রম্যতত্ত্ব/বিদ্যা,
Immune system - অনাক্রম্যতন্ত্র,
Immune - অনাক্রম্য,
Immunization (-zed)- অনাক্রম্যকরণ (-কৃত)
জৈব-অজৈবের আক্রমণ ও তার প্রভাব-প্রতিরোধ নিয়েই অনাক্রম্যবিদ্যার আলোচনা। নতুন অক্রের উৎপত্তির সূত্র কী? অনাক্রম্যতা শব্দটি চিকিৎসাবিদ্যার বাইরেও সচ্ছন্দে ব্যবহার করা যায়।

হিমু এর ছবি

অক্র শব্দের অর্থ 'প্রাচীর' (আক্ষরিক অর্থ: অতিক্রমে বাধা দেয় যে)। আধুনিক বাংলায় এর ব্যবহার নেই, কাজেই আশয়ান্তর করে ভিন্ন অর্থে প্রয়োগের সুযোগ অবারিত।

'অনাক্রম্যতা' বা 'রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা' শব্দগুলো প্রচলন পেয়েছে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এগুলো নিজেও দীর্ঘ বলে ইমিউনিটি থেকে উদ্ভূত শব্দগুলো অনাবশ্যক দীর্ঘ হয়। অক্র শব্দটা ছোট বলে সম্পর্কিত অন্য শব্দগুলোও পর্যায়ক্রমে ছোট হয়ে আসে।

পলাশ এর ছবি

প্রতিমন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 'অনাক্রম্য' শব্দ বা শব্দবন্ধ সহজতর মনে হওয়ায় প্রশ্নটি রেখেছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে যেসব শব্দের পরিভাষা স্বল্প পরিসরে হলেও প্রচলিত আছে সেগুলো ভুল না হলে ওভাবে রাখতেই আগ্রহী। একাধিক পরিভাষা প্রচলিত হলে ভাষার সমৃদ্ধি হয়ত বাড়ে, কিন্তু মাতৃভাষায় বিজ্ঞান শিখতে বিভ্রান্তি তৈরি করে না কী? সে যাই হোক, immunization(zed) এ আপনার প্রস্তাবনা কী? অক্রায়ন(য়িত)?

হিমু এর ছবি

অক্রায়ন দেখেছিলাম, যতদূর মনে পড়ে। অক্রায়িত বলতে পারেন।

বিজ্ঞানশিক্ষাও বিজ্ঞানের মতোই, ক্রমাগত হালনাগাদ হবে। আপনি যদি আজ থেকে একশ বছর আগে বিভিন্ন সাময়িকীতে প্রকাশিত বিজ্ঞানপ্রবন্ধগুলো পড়েন, দেখবেন একই ধারণা প্রকাশের জন্যে একেক লেখক একেক বাংলা বিকল্প ব্যবহার করেছেন। সময়ের সাথে সেগুলো সংহত হয়েছে। আমরাও এ প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই যাবো কিছুদিন।

পলাশ এর ছবি

ধন্যবাদ। immune এর ক্ষেত্রে অক্রের কী রূপ হবে? অক্র আছে যার অর্থে অক্রী?

হিমু এর ছবি

সাক্র দেখেছিলাম, যতদূর মনে পড়ে।

পলাশ  এর ছবি

অনাক্রম্যতত্ত্ব/বিদ্যা লিখলে দুঃখিত। অনাক্রম্যতাবিদ্যা হওয়াই যুক্তিযুক্ত। যে কোন বিদ্যা বা তত্ত্বই 'আক্রমণ' যোগ্য ।

মিজান এর ছবি

মন্তব্যটা দেরিতে হচ্ছে যদিও
antigen=অক্রজান
তাহলে immunogen=?

আবরার এর ছবি

আপনার প্রশ্নটা এই প্রবন্ধে বাড়তি মূল্য যোগ করেছে। এমন আলোচনা আরও হোক, তাহলে পরিভাষা নিয়ে আমাদের চিন্তা আরও বেগ পাবে।

ইমিউনোজেন যেহেতু অক্রজানের একটি বিশেষ উপগণ বা subset এর মধ্যে পড়ে, একে প্রাক্রজান বলা যায় (প্র + অক্রজান)। এ ব্যাপারে লেখক ওসমান ভাইয়ের কী মত?

পলাশ এর ছবি

পরিভাষা তৈরিতে একই শব্দ থেকে উৎপন্ন শব্দগুলোর পরিভাষাও একইরকম রাখলে শিখতে সুবিধা হয়। সেক্ষেত্রে immunogenকেও immunityর ছন্দে রাখলে immunogen এর নতুন ছাত্রের ধরতে সুবিধা হবে। আর anti- কে বিপরীতার্থেই ব্যবহার করি; অনেকক্ষেত্রেই প্রতি-উপসর্গযোগে। সেক্ষেত্রে antigen, antibody ভিন্ন বিবেচনার দাবী রাখে।

মিজান এর ছবি

পরিভাষার ক্ষেত্রে কি আমাদের শব্দ থেকে শব্দ অনুবাদের দিকে নজর দেওয়া উচিৎ নাকি শব্দটা কোন জিনিসটাকে বোঝাচ্ছে সেদিকে নজর দেওয়া উচি?

অভিরূপ এর ছবি

দ্বিতীয়টি।

প্রথমটির দিকে আমলাদের ঝোঁক বেশি। ইংরেজিতে একে বলে Calque। একটি ইংরেজি শব্দ নিয়ে তার উপাদানগুলি আলাদাভাবে বাংলা করে জোড়া দেওয়া। কিছু ক্ষেত্রে ক্যাল্ক করা অপরিহার্য, তবে এটা যত কম করা যায় তত ভাল। দুর্ভাগ্যক্রমে এর উদাহরণ ক্রমশ বাড়ছে।

উদ্ভিদবিদ্যা থেকে যদি আমরা উদাহরণ টানি, Transpiration আর প্রস্বেদনের দিকে তাকানো যায়। আমি তো বলব, প্রস্বেদনের মধ্যে প্রক্রিয়াটির ছবি আরও উজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠেছে। ক্যাল্ক করতে গেলে এটি দাঁড়াত অভিশ্বসন বা অনুশ্বসন বা পরিশ্বসন জাতীয় কিছু (Trans-এর একক বাংলা বিকল্প নাই, spirare মানে শ্বাস নেওয়া)। অন্যদিকে প্রস্বেদন বললে গাছের উন্মুক্ত অংশে বিন্দু বিন্দু জলের (যা শিক্ষার্থী বা পাঠক নিজের চোখেই দেখতে পান) সাথে সরাসরি সংযোগ ঘটে। একটি গাছ যেন ঘেমে উঠছে, এমন কল্পনা করা যায়।

যান্ত্রিক, আড়ষ্ট 'অনুবাদ' নয়, আপনারা এমন শব্দ সৃজন করুন, যা ভোক্তার কল্পনাকে তাড়িত করে। তাহলে বাংলা ভাষার সাথে একজন নবীন ভাষীর প্রণয় ঘটবে। শুষ্ক ও দায়সারা পরিভাষা শুষ্ক ও দায়সারা দাম্পত্য জীবনের মতই, প্রতিদিন তিক্ততা বাড়ায়। ধন্যবাদ।

সত্যপীর এর ছবি

হাততালি

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

শেষের লাইনটা দারুন হয়েছে!!! চলুক

পরিভিষা অনুবাদের ক্ষেত্রে আমার মনে হয় সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনটি হচ্ছে Conceptual Equivalence -- আক্ষরিক অনুবাদ, কাল্‌ক বা আপনার কথা মত ট্রান্সক্রিয়েশন - যাই হোক না কেন। তবে এইটুকু ঠিক রেখে আমার মনে হয় আপনার কথাই ঠিক!!!

****************************************

পলাশ এর ছবি

পারিভাষিক অর্থ সন্ধানে চেষ্টা করা হয় দুকূলই রাখতে। যেমন অক্রের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। অত্যন্ত বোধগম্য কারণেই immunity থেকে উদ্ভূত সবধরণের শব্দে অক্র এর শব্দাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। নইলে immunity বোঝাতে আবালবৃদ্ধবনিতার জন্য 'রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা' আছে। বলামাত্রই বোঝা যায় কিন্তু পদান্তর দুরূহ। সূক্ষ্ম সমস্যা হয়েছে অক্রজানে। antigen আর immunogen এর কিঞ্চিৎ পার্থক্য আছে।

মিজান এর ছবি

active immunity=কি হবে?
সক্রিয় অক্র?
আরো ছোট করা যায় কি?

পলাশ এর ছবি

সেক্ষেত্রে প্যাসিভ কী হবে? অক্রিয়/নিষ্ক্রিয়? প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ব্যবহার করা যায় কি? অস্থিসন্ধির নড়নেও তাহলে প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ ব্যবহার করা যায়। বা অন্যকিছু?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।