নব্বইয়ের দশকে টাঙ্গুয়ায় পল থমসনের পাখি দেখা

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: মঙ্গল, ২০/০৭/২০২১ - ৯:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

টাঙ্গুয়ার হাওড়ে যেকোনো ভ্রমণই শহুরে ব্যস্ত জীবনের কোলাহল ও পাঁশুটে আবহাওয়া থেকে দূরে একটা অসাধারণ পরিবেশে পাখি দেখার চমৎকার সব অভিজ্ঞতা এনে দেয়। কিন্তু জলচর পাখিশুমারির জন্য সেখানে ২০২০ সালে যাবার পরে আমার এখানে প্রথমদিকের ভ্রমণের কথা মনে আসলো। তাই আমি এখানে চেষ্টা করব আশির দশকের টাঙ্গুয়াতে যে তিনটি ভ্রমণ আমরা করেছিলাম সেগুলো নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে। প্রতিটি ভ্রমণেই যেন এই বিশেষ জায়গাটি নিজেকে নব নব রূপে আমাদের সামনে তুলে ধরতো, সেই সময়ে আমাদের প্রতিটি যাত্রাকেই মনে হতো অজানার উদ্দেশ্যে কোন রোমাঞ্চকর অভিযান।

১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে প্রথমবারে টাঙ্গুয়া ভ্রমণে আমি ফ্লাড অ্যাকশন প্ল্যান
(FAP)-এর পাখি-দলের সাথে হাওড়ের মাসিক পাখিশুমারি জন্য যুক্ত হই( দলে ছিলেন এস এম এ রশিদ এবং আনিসুজ্জামান খান)। আমরা সপ্তাহের অধিকাংশ সময়ই ব্যয় হয়ে যেত হাওড়ের বিভিন্ন জায়গায় নৌকায় করে পৌঁছতেই। প্রথমবারের ভ্রমণ থেকে খুব মনে পড়ে সুনামগঞ্জের স্থানীয় ইঞ্জিন নৌকার উপরে আমি, নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলার নিচে বসে, দূর দিগন্তের মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়ের দিকে, আপাতদৃষ্টিতে স্বচ্ছ জলের তেপান্তর পেরোতেই আছি ভাসতে ভাসতে। মাঝে মাঝে মাঝে ছায়া পড়লে জলের দিকে তাকিয়ে সেখানে নিজস্ব জলঅরণ্যের মধ্যে দেখেছি শোল মাছের তাড়া খেয়ে অন্যান্য ছোট মাছের দলকে লুকোতে।

টানা কয়েকদিন চলার পরে আমরা নৌকা থেকে নামতে পারতাম এবং ধান ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে সামান্য দূরত্ব পার হবার পরেই ভারতের সীমান্তে উপস্থিত হতাম। মাঠের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া ছোট ছোট কংক্রিটের পিলারগুলোর সারি দু'দেশের মধ্যকার সীমানা বোঝাত। আমি ভেবেছিলাম পাহাড়ের পাদদেশে যেয়ে Passerine পাখিদের খুঁজবো, কিন্তু পরে মনে হলো এর চেয়ে আমার বাংলাদেশে পাওয়া পাখির তালিকার দিকে মনোযোগ দেওয়াই শ্রেয়। যদিও পরিযায়ী মৌসুমের দেরী আছে তবুও জলচর অতিথিরা এর মধ্যেই আসা শুরু করেছে যেমন এই অঞ্চলের বাসিন্দা দেশি-মেটেহাঁসের (Indian Spot-billed Duck) মধ্যে একজোড়া নীলমাথা-হাঁস (Mallard) চরে বেড়াচ্ছিল, দুইটি পাকরা-কাপাসি ( Pied Harrier) মাথার উপরে ঘুরছিল, আটটা প্যালাসি-গাঙচিল ( Pallas’s Gull) মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য ছিল একটি অগভীর জায়গায় পরে থাকে গরুর মৃতদেহ, যা আকর্ষণ করে এনেছিল এক ঝাঁক বাংলা-শকুন ( White-rumped Vulture), যাদের মধ্যে ছিল কেবল মাত্র একটি সরুঠুঁটি-শকুন ( Slender-billed Vulture)।

আমার পরবর্তী পাখি ভ্রমণ ছিল ১৯৯৩ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে সেখানের বার্ষিক জলচর পাখিশুমারিতে সাহায্য করার জন্য। নানা ধরনের লজিস্টিক জটিলতা দেখা দেওয়ার কারণে, অনেকটা যাত্রাবিরতির জন্যই একটা জায়গায় থেমে প্রায় আড়াই লক্ষ বুনোহাঁসকে চলমান গালিচার মতো পাশুয়ার হাওড়ের জলের উপর দিয়ে সরে‌ সরে‌ যেতে দেখার পর হঠাৎ জানতে পারলাম যে আমি হব টাঙ্গুয়াতে পাখিশুমারি করার একমাত্র ব্যাক্তি। আমরা সাধারণত সারা হাওড় ঘুরে যে পরিমাণ শুমারি করতে পারতাম, তা সেই ইঞ্জিন নৌকার উপরে দাঁড়িয়ে করার জন্য আমার হাতে কেবলমাত্র একটি বিকেল ছিল।

প্রবেশপত্র এত সুন্দর ছিল মনে হতো সেখানে সারা জীবন থেকে যেতে পারি। বাসায় দুটো ছানা সহ পালাসি-কুরাঈগলের ( Pallas’s Fish Eagle) চমৎকার জোড়াটি দুর্দান্ত ছিল কিন্তু সবচেয়ে কাছের বিলে যত ধরনের হাঁসের ঝাঁক ছিল কাছে যেয়ে দেখলাম প্রতিবারেই আমার জন্য একটি বা দুটি প্রজাতি নতুন সেখানে।

একসময় এই পাখি গণনার কাজ থামানো হলো কিন্তু ততক্ষণে আমি ৩৯টি ফুলুরি-হাঁস ( Falcated Duck) এবং ১১২টি বেয়ারের ভুতিহাঁস ( Baer’s Pochard) দেখে ফেলেছি। নৌকার মাধ্যমে একটু দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হাওর ঘুরে গণনা চালানোর সময় প্রতিবার নলখাগড়ার পিছনে আমরা বিশাল সব ঝাঁক পেয়েছিলাম। নিশ্চিত ভাবেই আমার গণনা হয়তো নিখুঁত ছিল না কিন্তু সেই বিলগুলোতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ছিল ১৩,৮০০ উত্তুরে-ল্যাঞ্জাহাঁস (Northern Pintail) এবং ১২,০৬০ পাতি-কুট ( Common Coot)। অবশ্য যদি আমরা আরো সময় দিতাম তবে নিঃসন্দেহে আরো বিরল পাখি দেখা যেত, যাহোক একটি পুরুষ বড়-স্কপ ( Great Scaup) দেখার আনন্দ নিয়েই আমাকে ফিরতে হলো।

সেবারের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত ছিল পাখি দেখা বাদেও হাওরের মাঝখানে মাঝখানে দেখা নোঙ্গর ফেলা কাঠের নৌকা যা আসলে হাওরের ইজারাদারদের পাহারাদারদের থাকার জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল- সত্যি বলতে সেই সময় পর থেকে হাওড়া মনে হয় আর কোন সময়ই এত কড়া পাহারার মধ্যে ছিল না। যে কারণে পাখিদের খুব আপন-মনে ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত এবং ৮৭৫টি লালমাথা-ভুতিহাঁসের ( Red-crested Pochard) ঝাঁককে ক্যাম্পের খুব কাছের সাঁতরাতে দেখা গেল। এটা খুবই আগ্রহ-উদ্দীপক বিষয় যে কিভাবে নানা এলাকায় কিছু কিছু প্রজাতির পাখির সংখ্যা বাড়ছে অথচ সেই একই সময় বক ও পানকৌড়ি জাতীয় পাখির সংখ্যা এখানে কম। সূর্যাস্তের পর পর আমরা হাওড় ছেড়ে যাবার সময় নলবনের উপরে পড়া কমলা রঙের আলোয় যে হাজার হাজার নৃত্যরত প্রাণীদের দেখেছিলাম সেগুলো কোন মশা-মাছি ছিল না বরং ছিল আবাবিল ও বালি-নাকুটির দল, যারা রাতের বাসস্থানের জন্য নলবনে অবতরণ করছিল।

১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হাওড়ের নলবন অধ্যুষিত এলাকায় বিশেষ বিশেষ ধরনের ফুটকি দেখার খবর পেয়ে ডেভিড জনসন এবং রোনাল্ড হালদারের সাথে আমি টাঙ্গুয়া যাই। তখন কোন হাঁস গণনার বিষয় ছিল না এবং আমাদের হাতে নৌকায় থাকার জন্য পুরো তিন দিন ছিল, এবং সাথে ছিল সেই সময়ে পাওয়া পাখি চেনার সেরা বইগুলো ( সালিম আলী ও ডিলন রিপ্লের হ্যান্ডবুক এবং বেন কিংসের দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার পাখি)। ডেভের সাথে পাখি ধরার জন্য আলাদা মিস্ট নেটও ছিল।

গ্রাম থেকে কাছেই হাওড়ার প্রবেশমুখে একটা জায়গার উপরে আমরা বেশি মনোযোগ দিচ্ছিলাম যেখানে নলখাগড়া, মাঝারি উচ্চতার ঘাস এবং খুব সামান্য জায়গা জুড়ে কর্দমাক্ত ধানক্ষেত ছিল এবং খুবই অল্প গরু ছিল (এখন এর মত বিশাল সব গরুর দল ছিল না যারা ঘাস খেতে খেতে আর কোন ঝোপ-ঝাড় ও নল হতে দিচ্ছে না)। বিশেষ জায়গাটি নানা জাতের ঝিল্লি ( Rail) ও গুরগুরির
(Crake) জন্য খুব ভালো মনে হচ্ছিল, আমরা বেশ ক'টি লালবুক-গুরগুরি ( Ruddy-breasted Crake) ও বেইলনের-গুরগুরিকে ( Bailon’s Crake) কাছ থেকে দেখতে পেয়েছিলাম।

আমরা নলখাগড়ার বনের দিকে নজর বেশি রাখছিলাম যেখানে কালামুখ-চটক ( Black-faced Bunting) ও নানা জাতের ক্ষুদে পাখিরা বেশ আনাগোনা করছিল, যাদের মধ্যে কালাভ্রু-নলফুটকি (White-browed Warbler) ও ধানি-ফুটকি (Paddyfield Warbler) অন্যতম ছিল। আমাদের জালে পাওয়া পাখিদের মধ্যে ছিল সম্ভবত উদয়ী-নলফুটকি ( Oriental Reed-warbler) এবং পালাসি-ফড়িংফুটকি (Pallas’s Grasshoper-Warbler), এছাড়াও বৈকাল বা তিলা ঝাড়ফুটকির ( Spotted Bush Warbler / Baikal Bush Warbler) মত পাখি (তখনও এদের প্রজাতি আলাদাভাবে সনাক্ত করা হয়নি) হয়তো একটি মেটে-ঝাড়ফুটকিও (Brown BushWarbler) ছিল, একটি চমৎকার পাতারি-ফুটকির ( Lanceolated Warbler) সাথে সাথে বাংলা-ঘাসপাখিরও ( Rufous-rumped Grassbird, এখনের নাম Indian Grass –babbler) দেখা মিলেছিল।

দ্বিতীয় দিনে যখন সূর্য কিছুটা নিচের দিকে নাম ছিল এবং নলবন ও জলাভূমি পাখিদের সাথে সাথে আমার সাথীরাও বিশ্রাম নিচ্ছিল, তখন কয়েকটা ধানক্ষেত জুড়ে অনেকটা বাঁশের মত উদ্ভিদে ভরা অঞ্চলে ঢুকে পড়ি। আবিষ্কার করি যে, এগুলো খুব বড় ধরনের নলখাগড়া, সেই নলবনের মধ্যে দিয়ে চলতে চলতে বিশাল লম্বা নলগুলোর মধ্যে দিয়ে কোনমতে চেপেচুপে নিজেকে এগিয়ে নিতে নিতে হঠাৎ একটা অপেক্ষাকৃত আঁধারময় হিম হিম জায়গায় পৌঁছায় যেখানে এই নলবন আমার মাথা থেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচুতে ছিল। সেখানের অল্প আলোতে আমার চোখ সইয়ে নিতে পড়ে থাকা ঝরাপাতার স্তুপে বসে খানিকক্ষণ বিশ্রাম নেই এবং তার পরে সেখানে চারপাশে চরে বেড়ানো পাখিদের অস্তিত্ব ও তাদের ডাক সম্পর্কে অবহিত হই।

সেদিন এবং পরদিন সকালে যখন আমরা সবাই সেখানে ফিরি সেখানে একটি চমৎকার পুরুষ ধলালেজ-চুনিকণ্ঠীর ( White-tailed Rubythroat) দেখা মিলে যা চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে প্রায়ই আমার পায়ের মাত্র তিন ফিটের মধ্যে এসেছিল। এরপরে দেখা মিলল একজোড়া কালচেনীল-চুটকির (Slatyblue Flycatcher), যা ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রথম রেকর্ড। মিস্ট নেটিং পদ্ধতিতে কাজ শুরু করার অনেক আগেই বোঝা গিয়েছিল যে সঠিক বাসস্থানে এই পাখিগুলোকে নিয়মিত দেখা সম্ভব। অপ্রাপ্তবয়স্ক ধলালেজ-রবিন ( White-tailed Robin) যেন জায়গাটিতে বনতলের মতে পেয়ে বসেছিল, এবং যেটিকে আমি দেশি-নীলরবিন ( Indian BlueRobin) বলে ভেবেছিলাম সেটি ছিলো আসলে একটি স্ত্রী লালগলা-ফিদ্দা ( Firethroat) (সাম্প্রতিক একটি পাখি রিং ক্যাম্পে পাখিটিকে হাতে নেবার সুবাদে আমি এখন আরও নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি), প্রায় একইরকম দেখতে কিন্তু লেজে সামান্য সাদাটে যে পাখিটি একলহমার জন্য দেখা গিয়েছিল সম্ভবত সেটি একটি পুরুষ লালগলা-ফিদ্দা। এখনো টাঙ্গুয়ার কিছু কিছু জায়গায় এই ধরনের ঝোপঝাড়ে মিস্ট জাল ব্যবহার করে এই পাখিগুলোর কোন কোনটার সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু বিশাল নলখাগড়ার আশ্রয়ে বসে, যেখানে এই পাখিগুলো নিজে থেকেই এসে দেখা দেয়, সেটা আর কখনোই সম্ভবপর হবে না কেননা সে পুরো বাসভূমি আজ সাফ করে ফেলা হয়েছে।

টাঙ্গুয়া এখনো এক অসাধারণ জায়গা যেখানে জলচর পাখিদের বিশাল ঝাঁক নিয়মিত প্রতি শীতে আসে এবং অতীতের চেয়ে এখন যাওয়া সহজ এবং অনেক বেশি পর্যটকরা এখন উৎসাহী সেখানে যাবার জন্য। কিন্তু ক্রমবর্ধমান মানুষ এবং গবাদিপশু এই ভূখন্ডের বেশ কিছু জায়গা ধ্বংস করে ফেলেছে এবং এটিকে আর সেই আগের মতো অজানা একটি অঞ্চল বলে মনে হয় না।

আমরা অতীতে ফিরে যেতে পারি না কিন্তু আমরা শুধুমাত্র স্মৃতি রোমন্থনের চেয়ে আরো বেশি কিছু করতে পারি। যথেষ্ট সদিচ্ছা থাকলে স্থানীয় মানুষ ও কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আমরা চেষ্টা করতে পারি, আমরা জানি যে জলাভূমি পরিবেশ খুব দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরতে পারে। গাছ লাগিয়ে, বেড়া বানিয়ে ঘিরে জলাভূমি ও জলাভূমির কিছু জায়গা সংরক্ষণ করে এমনকি সেই বিশাল নল গাছ আবার লাগিয়ে ৫ থেকে ১০ বছর পরে কে জানে হয়তো আবার আমরা এরকম বিশাল কোন নলবনের গোঁড়ায় বসে নিশ্চুপ অপেক্ষা করতে পারব কিছু অসাধারণ পাখির আবির্ভাবের জন্য।

( ডঃ পল মাইকেল থমসন, বাংলাদেশের সকল পাখিপ্রেমীর কাছে পরিচিত পল থমসন বা পল নামে।

ইংল্যান্ডেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত এসেছিলেন তাঁর পি এইচ ডি'র গবেষণার জন্য, বন্যা নিয়ে। সেই থেকে যাতায়াতের মাঝে থাকলেও গত ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশেই তাঁর ঘর। কাজ করেছেন বন্যা, মৎস্য সম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক নানা সংস্থা ও প্রকল্পে। কিন্তু তাঁর প্রফেশনাল জীবন নিয়ে আমাদের বলার চেয়ে আমরা তাঁর প্যাশন নিয়ে বলতে চাই।

পলের নেশা হচ্ছে পাখি দেখা, ৫ বছর বয়সে জনৈক প্রতিবেশী তাকে শিশুদের পাখি চেনার রঙচঙে এক বই দিয়েছিল, সেই বইই তাকে নিয়ে আসে পাখিপ্রেমের জগতে। ৬০ বছর ছোঁয়া এই তরুণ এখনো পারলে প্রতিদিনে নিসর্গে যান, পাখিদের পর্যবেক্ষণ করেন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। আর শুধু দেখেনই না, সব তথ্য লিপিবদ্ধ করেন, সবসময়ই। যে কারণে বাংলাদেশের গত ৩০ বছরের যে কোন পাখি বিষয়ক তথ্য লাগলেই সবার আগে আমরা পলকেই বুঝি। অতি অল্প সময়ে চুলচেরা নিখুঁত তথ্য তিনি আমাদের দিয়ে দেন যত ব্যস্তই থাকুন না কেন।

আজীবন ব্যাচেলর, অতি নিভৃতচারী মানুষ তিনি, ব্যক্তিগত ব্যাপারকে কোনসময়ই সামনে নিয়ে আসেন না। পাখিরদলে সবচেয়ে বেশী পরিশ্রম করেন যেচে যেচেই। পল বেশ ভালো বাংলা বুঝেন, বলতেও পারেন (যদিও আমাদের সাথে সহজে বলেন না)৷ হাত দিয়ে চমৎকার ভাত-মাছ খেতে পারেন।
পলের জীবন নিয়ে বাংলাদেশের পাখিপ্রেমীরা অনেক কিছু জানলেও একটা তথ্য খুব কম লোকই জানেন যে নার্গিস আক্তার পরিচালিত শাবানা আজমী ও মৌসুমী অভিনীত 'মেঘলা আকাশ' সিনেমায় পল অভিনয় করে ছিলেন, স্বনামেই, যদিও কয়েক মূহুর্তের জন্য।

বাংলাদেশের পাখি বিষয়ক কাজের জন্য পলের নাম সবসময়ই বাংলাদেশ মনে রাখবে।)


মন্তব্য

ওডিন এর ছবি

বেশ লাগলো এই অনুবাদ!

তারেক অণু এর ছবি

আরও আসবে, পলের এই দেখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ সে রেকর্ড রেখেছিল সবকিছুর।

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার!

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ হে পীরবাবা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।